সারা বাংলা

সিরিয়াল রেপিস্ট নাঈমের টার্গেট ছিলো যারা

বরগুনায় শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার সময় গ্রেপ্তার নাঈমুর রহমান ওরফে নাঈম একজন সিরিয়াল রেপিস্ট বলে জানিয়েছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ ও বরগুনার পুলিশের পৃথক জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য।

পুলিশ জানিয়েছে, রেপিস্ট নাঈমের টার্গেট ছিলো শিশুরা। দেশের অনেক জেলায় অসহায়ত্বের কথা বলে ভবঘুরে হয়ে আশ্রয় নিয়ে চুরি ও ধর্ষণ করে বেড়াতেন তিনি। নাঈমের এমন কর্মকাণ্ডের জন্য চার বছর আগে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন তার স্বজনরা।

গত ৯ অক্টোবর বিকেলে বরগুনায় ৯ বছরের এক শিশুকে পথ দেখিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে মুখ চেপে তুলাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেটে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান তিনি। ওই শিশুর চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়। নাঈমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নাঈমকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসেন বরগুনা সদর থানায়। জিজ্ঞাসাবাদে নাঈম নারায়ণগঞ্জে ২৩ সেপ্টেম্বর এক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেন। 

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন রাইজিংবিডিকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাঈম জানিয়েছেন, দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলায় ভবঘুরে সেজে নিজের অসহায়ত্বের কথা বলে বিভিন্ন পরিবারে প্রথমে আশ্রয় নিতেন কাজের লোক হিসেবে। এরপর আশেপাশে থাকা শিশুদের কখনও আইসক্রিম আবার কখনও চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে নিজের আশ্রয়স্থল অথবা নির্জন কোথাও নিয়ে ধর্ষণ করতেন। মূলত নাঈম ধর্ষণের জন্য টার্গেট করতেন ছোটো শিশুদের।

তিনি আরও জানান, দু’এক দিনের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জের আদালতে নাঈমকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবেন তারা।  

বরগুনার পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর মল্লিক রাইজিংবিডিকে জানান, ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার নাঈম সিরিয়াল রেপিস্ট বলে প্রমাণ পেয়েছেন তারাও। এছাড়া, নানান অপরাধের তথ্য দিয়েছেন নাঈম।

নাঈম বরগুনার সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া এলাকার জব্বার মাঝির ছেলে। এলাকায় নাঈম চিহ্নিত অপরাধী।

নাঈমের বড় ভাই মো. রুবেল মাঝি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মাত্রাতিরিক্ত অপরাধের কারণে চার বছর আগেই পরিবার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয় নাঈমকে।’

 নাঈমের প্রতিবেশী দুলাল গাজী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘একাধিকবার ইভটিজিং, ছাগল চুরি, মোবইল চুরিসহ নানান অপরাধ করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছিল নাঈম।’

একই এলাকার আউয়াল মিয়া নামে এক মাদ্রাসা কর্মচারী বলেন, ‘সব সময় মেয়েদের দিকেই নেশা ছিল নাঈমের। এবার গ্রেপ্তার হয়েছে নাঈম। সর্বোচ্চ শাস্তি হলে এলাকার মেয়েরা শান্তিতে থাকতে পারতো।’

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নাঈমের সব অপরাধের তদন্ত কার হচ্ছে। তদন্ত শেষে শিগগিরই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।’