সারা বাংলা

কাঁটাতারের বেড়া আর প্রাচীরে ছিন্ন হয় না আত্মীয়তার বন্ধন

কাঁটাতারের বেড়া, প্রাচীর কিংবা ভিন্ন দেশ হলেও ছিন্ন হয় না আত্মীয়তার বন্ধন। এমনি এক দৃশ্য চোখে পড়লো দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের শূন্যরেখায়। দুই দেশের সীমানার দুরত্ব বজায় রেখে দূর থেকে তারা আত্মীয়তা বন্ধন রক্ষা করছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে দেখা যায়, রেললাইনের পশ্চিম পার্শ্বে ভারতের হিলি সীমান্ত আর পূর্বপার্শ্বে বাংলাহিলি সীমান্ত। দুই সীমান্তে দাঁড়িয়ে আছে তাদের আত্মার আত্মীয়রা। দুই দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজার আজ মহানবমী। এই নবমীতে সীমান্তে ছুটে এসেছে আত্মীয় বা আপন ধর্মীয় মানুষ। তারা কাছে যেতে না পারলেও দূর থেকে দুরত্ব বজায় রেখে পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করছেন। এছাড়াও অনেক আত্মীয় স্বজনদের দূর থেকে কুশল বিনিময় করতেও দেখা গেছে।

জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থেকে আসা বিজয় কুমার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আজ আমাদের নবমী, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে হিলি সীমান্তে আসছি। ওপারে আছে আমাদের ধর্মীয় মানুষ। একই ধর্ম পালন করি, তাই এখানে আসলাম। তাদের কাছে তো যেতে পারছি না, দূর থেকে দেখছি সেটাও অনেক ভালো লাগছে।’

ঘোড়াঘাট থেকে আসা প্রদীপ কুমার রায় রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ওপারে আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন আছে। এখন তো আর ওপারে যাওয়ার কোন উপায় নেই। তাই হিলি চেকপোস্টে আসছি, ফোনে তাদের সাথে কথা হয়েছে, তারাও ওপারে দাঁড়িয়ে আছে। দূর থেকে দেখছি আর হাতের ইশারায় কথা বলছি। কাছে যেতে না পারলেও খুব ভাল লাগছে। একনজর তাদের দেখতে পেলাম।’

তৃপ্তি রানী নামের একজন বৃদ্ধা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ওপারে আমার বাবার বাসা। অনেক দিন হলো তাদের দেখিনি। করোনার কারণে যাওয়া হচ্ছে না। তাই ভাই-বোনদের ও তাদের ছেলে-মেয়েদের দূর থেকে একটু দেখতে পেলাম, খুব ভালো লাগলো।’

এ বিষয়ে হিলি সিপি ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার ইয়াসিন আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আজ হিন্দু ধর্মের দূর্গা পূজার মহানবমী। এ উপলক্ষে দুই দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সীমান্তের দুই পাশে এসে অবস্থান করছে। তাদের সীমান্তের দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করতে দিচ্ছি। আমরা সব সময় সীমান্ত রক্ষার জন্য কঠোর অবস্থানে আছি।’