সারা বাংলা

কুষ্টিয়ায় দিগন্তজুড়ে আমনের সমারোহ, পোকা নিয়ে দুশ্চিন্তা

কুষ্টিয়ার দিগন্ত জুড়ে এখন সবুজে ভরা ধানক্ষেত। রোপা আমন ধানে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ। মাঠের যে দিকে চোখ যায় রোপা আপন ধান দুলছে শরতের বাতাসে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবছর বেশি চাষ হয়েছে রোপা আমন ধানের। আধুনিক ছোয়া ও যন্ত্রপাতির ব্যবহারে কৃষি শ্রমিকের সঙ্কটেও বিপদে পড়েনি ধান চাষিরা। 

আমন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষ হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বেড়েছে পোকার উপদ্রব। পোকা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক।

এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জরিপ, পার্চিং, আলোক ফাঁদের উপরে গুরুত্ব দিয়ে আমনে পোকা দমনে কাজ করছে। ফলে সুফলও মিলছে। তুলনামূলকভাবে ক্ষতি কম হবে বলে আশাবাদি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, এবছর কুষ্টিয়া জেলার ৬টি উপজেলায় ৮৮ হাজার ৮শ ৮৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৭৯ হাজার ৪শ হেক্টর, ৮ হাজার ৩শ ৩৫ হেক্টর হাইব্রিড এবং ১ হাজার ১শ ৫০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের রোপা আমন। কিন্তু জেলায় আবাদ হয়েছে ৮৮ হাজার ৮শ ৯৫ হেক্টরে।  দেখা গেছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অনেক বেশি চাষ হয়েছে। এখন ফসল ঠিকমতো ঘরে তুলতে পারলেই হলো। কারণ, পোকার উপদ্রব ভয় ধরিয়ে দিয়েছে চাষিদের।

দুলাল আলী নামে এক চাষি বলেন, রোপা আমন ধান মাঠে বেশ ভালো হয়েছে। তবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে খুব। বিষ দিয়েও যেনো কোন কাজ হচ্ছে না।

ফরিদুল ইসলাম নামের আরেক কৃষক বলেন, কয়েকদিন আগেও ধানের জমিতে গেলে মন ভরে যেতো। বেশ ভালো ফলন পাবো বলে আশা করেছিলাম। তবে এখন পোকার কারণে এবার ফলনটা কম হতে পারে ।

ভেড়ামারা উপজেলার ঠাকুর দৌলতপুর এলাকার কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবছর মাজরা পোকার আক্রমণ বেশি। তবে খুব একটা ফলনের পার্থক্য হবে না।

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, খরিপ-২ মৌসুমের রোপা আমন ধানে এ বছর জলবায়ূর কারণে পোকার আক্রমন একটু বেশি। তবে আমাদের সার্বক্ষনিক চেষ্টার ফলে পোকার আক্রমন বর্তমানে নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। পোকায় ক্ষতির পরিমান কম হবে বলে আশা করি।

তিনি বলেন, আমরা কৃষকদের ফসলের উপকারি ও অপকানি পোকা চেনার উপায়, অধিকহারে কীটনাশক না ব্যবহার, আধুনিক চাষাবাদ ও জৈব পদ্ধতি অবলম্বনে উৎসাহী করছি। 

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ধান ইতোমধ্যে থোড়, কোথাও কোথাও শীষ বের হচ্ছে। আশা করছি উৎপাদনও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।