সারা বাংলা

তীব্র গরমে নাকাল সিলেটবাসী

সিলেটে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র গরমে পুড়ছে নগরবাসী। সূর্যের প্রচণ্ড তাপে গা পুড়ে যায় এমন অবস্থা। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

শনিবার (১৬ অক্টোবর) সিলেট নগরের কয়েকটি এলাকার ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও নেই স্বস্তির বাতাস। প্রচণ্ড তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। যারা রাস্তায় বের হয়েছেন, তাদের হাতে ছাতা ও পানির বোতল দেখা গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশ স্বাধীনের পর সিলেটে কখনো এতো গরম পড়েনি। গত ৬৫ বছরের মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সিলেটে ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা ১৯৫৬ সালের পর সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। প্রায় ৭ বছর আগে ২০১৪ সালের অক্টোবরে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।

নগরের গুরুত্বপূর্ণ চৌহাট্টা পয়েন্টে দেখা যায়, কয়েকজন রিকশাচালক একপাশে বসে আছেন। কেউ কেউ তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন ফুটপাতের লেবুর শরবতে।

শফিক নামে এক রিকশাচালক বলেন, ‘এই গরমে রাস্তায় বের হতে মন চায় না। জীবনের প্রয়োজনে রাস্তায় নামতে হয়। তবে যাত্রী কম। মাঝে মধ্যে দুই একজন যাত্রী পাই, তাদের কাছে কিছুটা বাড়তি ভাড়া চাই।’

রিকশাচালক সত্তার মিয়া বলেন, ‘গরমে রিকশা চালানোর সময় মাথা ঘোরায়। বারবার পানি খাই। তবুও তৃষ্ণা মিটে না। আর কতো দিন এমন গরম থাকবে আল্লাই জানে।’

নগরের আম্বরখানা এলাকার ব্যবসায়ী তুহিন আহমদ বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে সকাল থেকেই প্রচণ্ড গরম থাকে। সারাদিন অসহ্য এই গরমে দোকানে ফ্যানের নিচে বসে থাকি। তবুও ঘেমে যাই। ব‌্যবসাতেও মন্দা।’

নগরের মিরাবাজার এলাকার স্কুল আমজাদ খান বলেন, ‘দিনে দুইবার গোসল করি। তবুও শরীরে শান্তি মিলে না। রাতেও ভ্যাপসা গরমে ঘুম হয় না। অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।’

সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যৈষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, এখন মানুষ গাছপালা কেটে কারখানা ও বড় বড় বিল্ডিং করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে আমাদের ওপর। দিন দিন বাড়ছে তাপমাত্রা। ভবিষ্যতে অবস্থা আরও ভয়াবহ হবে। চলতি মাসের শেষ দিকে সিলেটে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান তিনি।

সিলেট জেলা সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মণ্ডল জানান, গরমের কারণে হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার রোগী বেড়েছে। বয়স্কদের প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া উচিত নয়। তারা এমনিতেই নানান রোগে ভোগেন। এ বিষয়ে  সবাইকে সচেতন হতে হবে। বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে। এছাড়া ডাবের পানি ও ফল খেতে পারেন।