সারা বাংলা

অর্থ সংকটে বন্ধের পথে ঘাসিটুলা ইউসেপ স্কুল

সিলেট নগরীর ঘাসিটুলা ইউসেপ স্কুল এখন অর্থ সংকটে বন্ধ হওয়ার পথে। এতে অনিশ্চয়তায় পড়েছে বিদ্যালয়টিতে অধ্যায়নরত ৫২০ শিশুর শিক্ষাজীবন। বিত্তবানরা এগিয়ে না আসলে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে স্কুলটিতে পাঠদান বন্ধ করে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ইউসেপ বাংলাদেশের সিলেট রিজিওনের রিজিওনাল ম্যানেজার মো. আনোয়ারুল ইসলাম। তার বক্তব্য স্কুলটির সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম চালানো ইউসেপ-এর পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না।

২০০৮ সালে ইউসেপ বাংলাদেশ সিলেট নগরীর অবহেলিত ঘাসিটুলা ও বালুচর এলাকায় বসবাসকারী নিন্মবর্তী পরিবারের ছেলে মেয়েদের জন্য দু’টি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। দু’টি বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে আসা প্রায় সব শিক্ষার্থী দিনমজুর, রিক্সাচালক, ঠেলা চালক, সবজি বিক্রেতা ও দোকান কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিতদের ছেলে-মেয়ে। 

বিদ্যালয়টির ঘাসিটুলা শাখায় বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ৫২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। 

অন্যদিকে বালুচর ইউসেপ স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ‘ক্লিক’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করেছে। ফলে শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান আছে। 

ঘাসিটুলা ইউসেপ স্কুলের শিক্ষক শাহ আলম জানান, আর্থিক কারনে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে গেলে সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুরা পুনরায় শিশু শ্রমে যোগ দেবে। শিক্ষাজীবন বন্ধ হয়ে যাবে তাদের। একমাত্র সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।

ঘসিটুলা ইউসেপ স্কুলে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী আকাশ জানায়, তার বাবা রাজমিন্ত্রী। বাবার উপার্জন দিয়ে ৫ সদস্যের পরিবার খুব কষ্টে চলে। এই স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে নিশ্চিতভাবে লেখাপড়া ছেড়ে আমাকে কাজে নামতে হবে।

ইউসেপ বাংলাদেশের সিলেট রিজিওনের রিজিওনাল ম্যানেজার মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান,  ইউসেপ সম্পূর্ণভাবে বিদেশী দাতাদের সহায়তায় পরিচালিত হয়। বিদেশীরা এখন সাধারণ শিক্ষায় টাকা দিচ্ছে না। শিক্ষা কার্যক্রম পুনর্গঠিত করে কারিগরি শিক্ষায় নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় বিত্তবান মানবিক ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি আছে তারা অন্তত: এখান থেকে তাদের এসএসসি পর্যন্ত শিক্ষা শেষ করতে পারবে। অন্যথায় আগামী জানুয়ারি থেকেই তাদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।

এমন উন্নত স্কুল এভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া কষ্টদায়ক বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট চেম্বরার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক আলিমুল এহসান চৌধুরী।  তিনি বলেন, স্কুলটি চলমান রাখতে স্থানীয় ও প্রবাসী দাতাদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।  আলিমুল এহসান নিজেই বিভিন্নজনের সাথে যোগাযোগ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।