সারা বাংলা

স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা, সন্দেহের তীর সাবেক প্রেমিকের দিকে

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে সুমাইয়া আক্তার (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার লাশের পাশ থেকে মনির মিয়া (১৭) নামে এক কিশোরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার শামসুল হক কলেজের সামনের একটি ভবন থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, আগের প্রেমিককে বাদ দিয়ে সম্প্রতি মনিরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুমাইয়ার। সেই জের ধরেই হয়তো সুমাইয়ার সাবেক প্রেমিক এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

নিহত সুমাইয়া আক্তার এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে উপজেলার পালিমা গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। তারা এলেঙ্গা কলেজ মোড় এলাকায় বাসা ভাড়া করে বসবাস করে আসছিলেন। আহত মনির উপজেলার মশাজান গ্রামের মেহের আলীর ছেলে। মনির অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া বাদ দিয়ে বাসের হেলপারের কাজ করছিল।

পুলিশ ও নিহত ছাত্রীর স্বজনরা জানান, সুমাইয়া সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে স্থানীয় একটি সেন্টারে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়। পরে স্থানীয়রা এলেঙ্গা সরকারি শামসুল হক কলেজের বিপরীত পাশে খোকন মিয়ার ভবনের সিঁড়িকোঠায় সুমাইয়া ও তার বন্ধু মনিরকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গুরুতর আহত মনিরকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সুমাইয়ার চাচা ফিরোজ মিয়া বলেন, আমার ভাই বউ-বাচ্চা নিয়ে এলেঙ্গায় ভাড়া বাসায় থাকেন। বখাটেদের অত্যাচারে কিছুদিন আগে তারা বাসা বদল করে এই বাসায় উঠেছেন। কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেটা বুঝতে পারছি না। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুমাইয়ার মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

টাঙ্গাইলের সহকারি পুলিশ সুপার (কালিহাতী সার্কেল) শরিফুল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আহত মনিরসহ দুইজনের সঙ্গে সুমাইয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সুমাইয়ার সাবেক প্রেমিক ক্ষোভে এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। দ্রুতই আমরা রহস্য উৎঘাটন করতে পারবো। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিব পাল চৌধুরী জানান, মনিরের গলায়, ঘাড়ে ও শরীরের বিভিন্নস্থানে ছুড়ি দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।