সারা বাংলা

সন্তান প্রসব, এসএসসির শেষ পরীক্ষা দিতে পারেনি কিশোরী

এসএসসির শেষ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া হলো না শান্তা খাতুন (১৬) নামে এক শিক্ষার্থীর। পরীক্ষার আগের দিন সন্তান জন্ম দেওয়ায় সে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। সে এ বছর গোয়ালন্দ আইডিয়াল হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। 

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) শান্তার শেষ পরীক্ষা ছিল। সে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের নুরু মন্ডল পাড়ার মো. শহিদুল ইসলামের মেয়ে। তার বাবা একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তার।

স্থায়ীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার বখাটে ছেলেদের হাত থেকে রক্ষা করতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে মাত্র ১৪ বছর বয়সে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় শান্তাকে বিয়ে দেয় তার পরিবার। বিয়ের পরও সে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই গর্ভে সন্তান আসে। এ অবস্থায় সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কিন্তু শেষ পরীক্ষার আগের দিন সে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। এতে প্রচণ্ড শারীরিক দুর্বলতার কারণে শেষের ‘পৌরনীতি ও নাগরিকতা’ বিষয়ে অংশ নিতে পারেনি।

শান্তা খাতুন বলে, ‘ভেবেছিলাম এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে কলেজে ভর্তি হবো। কিন্তু শেষ হাসিটা আমার হাসা হলো না। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা করে ভালো চাকরি করবো। তাই অল্প বয়সে বিয়ে হলেও হার না মেনে শত সংগ্রাম করে নিজের পড়ালেখাটা চালিয়ে গিয়েছিলাম। তবে, শারীরিক দুর্বলতার কাছে হেরে গেলাম।তবে চেষ্টা করবো আগামীবার আবারও পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার।’

পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব মুহম্মদ সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এবছর ফরম পূরণ করার পরও ১৮ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। আমার ধারণা এদের প্রায় সবাই শান্তার মতো বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক বিষয়।এ বছর গোয়ালন্দ উপজেলা থেকে ১ হাজার ১৪৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।’

গোয়ালন্দ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে কিন্তু নানা কারণে তা পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না। সবাইকে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শেষ পরীক্ষার দিন কক্ষ পরিদর্শন করতে গিয়ে জানতে পারি বাচ্চা জন্ম নেওয়ায় শান্তা নামের ওই শিক্ষার্থী শেষ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’