সারা বাংলা

মুক্তিযোদ্ধা আমজাদকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় মামলা 

মহেশখালীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমজাদ হোসেন নিজে বাদী হয়ে মহেশখালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। 

তবে এ মামলায় এখনো পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মফিজুল ইসলাম।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদের ওপর হামলাকারীরা প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তাঘাটে ঘুরাঘুরি করছে বলে জানা যায়। আমজাদ হোসেনকে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকি দিচ্ছে আসামিরা। এমনকি মামলা তুলে না নিলে প্রাণে মেরে গুম করে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন আমজাদ হোসেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন- মহেশখালী পৌরসভার সিকদারপাড়া গোরকঘাটা এলাকার কুখ্যাত রাজাকার মৃত হাসেম সিকদারের ছেলে পৌরমেয়র মকছুদ মিয়া (৫৩), তার ছেলে হাম্মাম শাহাজাদ (২১), মিরাজ উদ্দিন নিশান (২২), ইসহাক মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ মামুন (৪২), মকছুদ মিয়ার ভাই আতা উল্লাহ বোকারী (৪৫), মৌলানা আব্দু সবুরের ছেলে শামসু উদ্দিন (২৮), মঈন উদ্দিন (৩০), মৃত জাফরের ছেলে বশির উদ্দিন (৩৩), নুরুল ইসলামের ছেলে সাহেদুল ইসলাম (৩১); 

তৌহিদুল ইসলাম (৩৪), মৃত গুরা মিয়ার ছেলে সোলতানুল আলম (৫৬), মৃত জাফরের ছেলে রকি (২৮), মৃত ইসহাকের ছেলে জাহাঙ্গীর-প্রকাশ বিলাই জাহাঙ্গীর (৪৫), হাসান মোর্শেদ (২৫), পশ্চিম সিকদারপাড়ার মৃত মৌলভী আতিকুর রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান (৩৫) ও মিজানুর রহমান (৪০);

গোরকঘাটার চরপাড়া ৯নং ওয়ার্ড এলাকার আব্দুল হকের ছেলে মাঈন উদ্দিন (২৮), পূর্ব সিপাহীর পাড়া এলাকার ছৈয়দ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শান্ত (২৬), জসিম উদ্দিন (২৪), ৪নং ওয়ার্ড নয়াপাড়া এলাকার মতলবের ছেলে গোলাপ শাহা (৩৫), ছোট মহেশখালী ডেইলপাড়া এলাকার মৌলভী আবছারের ছেলে ওবাইদুল মোস্তফা কাউছার (৩৬); 

ঘোনাপাড়া এলাকার সোলতান আহমদের ছেলে ফরিদ আলম- প্রকাশ কালা ফরিদ (২৭), দক্ষিণ ঘোনাপাড়া এলাকার মৃত মোছন আলীর ছেলে আলা উদ্দিন (৩৫), মহেশখালী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড এলাকার মৃত মোহাম্মদ আমিরের ছেলে আলা উদ্দিন (৩২) ও মৃত নজিরের ছেলে আমান উল্লাহ (৩৫)।

গত ২৪ নভেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন গোরকঘাটা বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ১৫/২০ জনের সন্ত্রাসীদের দলবল তাকে খুন করার উদ্দেশ‌্যে কুপিয়ে মারাত্মক জখম আবস্থায় লিডার শীপ স্কুল এন্ড কলেজের সামনে ফেলে চলে যায়। 

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আত্মীয় স্বজন এবং এলাকার লোকজনের সহায়তায় উদ্ধার করে মহেশখালী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়ার লোকজন কর্তৃক কুতুবজুমস্থ আমজাদ হোসনের ‘১৪ লাখ টিক্কা’ নামক চিংড়ি ঘের ডাকাতির ঘটনা নিয়ে আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে ওই ঘটনায় মেয়র মকছুদ মিয়াসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা করার ঘটনা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। 

আমজাদ হোসেনের ছেলে মাস্টার দেলোয়ার হোসেন জানান, মকছুদ মিয়ার সন্ত্রাসী বাহিনীর হত্যা প্রচেষ্টার পর তার বাবা কোনো রকমে জানে বেঁচে যান। বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।

এ ব্যাপারে মামলার আসামি মেয়র মকছুদ মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. মফিজুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মামলাটি সবে মাত্র হয়েছে। এখনো পর্যন্ত আসামিদের মধ্যে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তবে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

এর আগে মেয়র মকছুদ মিয়া ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করায় আমজাদকে এলাকা ছাড়া করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘটনার বিবরণ দিয়েছিলেন। তবে কোনো প্রতিকার পাননি।