সারা বাংলা

ছোট্ট এক কক্ষে ৩ বুথ, দুর্ভোগ

ছোট্ট একটি মক্তব। একটিই কক্ষ। একটি বুথ করাই যেখানে দায়। সেখানে তিনটি বুথ স্থাপন করে চলছে ভোটগ্রহণ। প্রিজাইডিং অফিসার, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা বসেছেন ঠাসাঠাসি করে। আর গাদাগাদি করে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ মাথা নিয়ে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বৃ-গুয়াকড়া মক্তব ভোট কেন্দ্রটিকে অমানবিক ভোট কেন্দ্র দাবি করলেন সাধারণ ভোটার, প্রার্থী, এজেন্ট, নির্বাচন পরিচালনাকারীসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।

রোববার (২৮ নভেম্বর) পাবনার ঈশ্বরদী, চাটমোহর, সাঁথিয়া উপজেলার ২৬ টি ইউনিয়ন ও বেড়া পৌরসভার ভোটগ্রহণ চলছে।

সকাল সোয়া ৯টায় দেখা মেলে চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বৃ-গুয়াখড়া মক্তব ভোট কেন্দ্রে নারী পুরুষের উপচেপড়া ভিড়। একটি মাত্র কক্ষে রয়েছে নারী পুরুষের ৩টি ভোটের গোপন বুথ, ভোটের সরঞ্জামসহ নির্বাচন পরিচালনাকারী সদস্যদের কর্মকাণ্ড এবং প্রিজাইডিং অফিসারের কার্যালয়। এজেন্টদের বসার মত জায়গা না থাকায় তারা বসে আছেন বারান্দায়।

প্রিজাইডিং অফিসার চাটমোহর সরকারি কলেজের প্রভাষক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘কিভাবে এটি কেন্দ্র করা হয়েছে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। এতো ছোট্ট একটি মাত্র কক্ষে কিভাবে সম্ভব নারী-পুরুষের ভোট নেয়া। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জায়গা সংকুলান না হওয়ায় প্রার্থীদের এজেন্টদের বারান্দায় বেঞ্চ পেতে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এই কেন্দ্রে নারী ভোটার ৪৯৩ জন আর পুরুষ ভোটার ৪৭৫ জন।’

আইন শৃংখলার দায়িত্বে নিয়োজিত স্টাইকিং ফোর্স প্রধান পাবনা সদর থানার ওসি অপারেশন মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমি এই কেন্দ্রে আসার পর থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে চরম অমানবিক ভোট কেন্দ্র এটি। একটি রুমের মধ্যে কিভাবে কিভাবে ঠাসাঠাসি করে ভোট নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি পরবর্তী নির্বাচনে এই কেন্দ্র পরিবর্তনের অনুরোধ জানান ইসির কাছে।

মহিলা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটার আমেমা খাতুন, জমেলা, শায়লা, লাবনী, কামিনী, জেসমিনসহ অনেক নারী ভোটার বলেন, ‘না আছে বড় মাঠ, না আছে জায়গা। ছোট্ট ঘরে কিভাবে ভোট নেয় এটা বুঝে আসে না। খুব কষ্ট হয় এভাবে ভোট দেওয়া।’

পুরুষ ভোটার আমজাদ, রাজ্জাক, সোলেমান, ফজলু, জহুরুল, শহিদসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ‘বেশ কয়েকবার আমরা এই কেন্দ্রে ভোট দেই। কিন্তু এটা ভোট কেন্দ্র হতে পারে না। এখন করোনা ভাইরাস।  অথচ সামাজিক দূরত্বের কথা বলা হলেও বাস্তব পরিস্থিতি আপনারা দেখে যান।’

বারান্দায় বসা নৌকা, আনারস, হাতপাখাসহ কয়েকজন প্রার্থীর এজেন্ট জানান, ‘কক্ষে জায়গা নেই জন্য আমাদের বারান্দা বসতে দেওয়া হয়েছে। অথচ আমরা এজেন্ট আমরা থাকবো ভেতরে।’

এ বিষয়ে উপজেলা রিটার্নিং অফিসার ও  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মগরেব আলী বলেন, ‘আমি নির্বাচনে দুই ইউনিয়নের দায়িত্ব পেয়েছি। কক্ষ বা ভোট কেন্দ্র নির্ধারন আমার নয়। এ বিষয়ে জানতে হলে নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, নীতিমালায় আছে পুরোনো ভোট কেন্দ্রগুলো বহাল রাখতে হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানলেও আশপাশে কোনো স্কুল, কলেজ বা মাদ্রাসা না থাকায় এটি কেন্দ্র হিসেবে চলে আসছে। আমরাও বুঝি একটি কক্ষে তিনটি বুথ। কিন্তু কিছু করার নেই।’