সারা বাংলা

ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪

ঠাকুরাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও ইউনিয়নে ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় বিজিবি’র গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে চারজন। আহতদের মধ্যে একজনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

রোববার (২৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে আহত অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মাঝারুল (৪০) মারা যান ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী আদিত্য রায় (১৭) মারা যায়। পরে আব্দুল বাকির স্ত্রী রহিমা বেগম মারা যান।

এর আগে একই দিন বিকেলে ঘিটোব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্বাচনি সহিংসতায় শাহপলি (২৭) নামে অপর একজনের মৃত্যু হয়। 

এলাকাবাসীরা জানায়, নির্বাচনি সহিংসতা শুরু হলে নিহতরা অনেকটা কৌতূহল নিয়ে কেন্দ্রের পাশে উপস্থিত হয়েছিলেন। নিহতদের প্রত্যেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। নিহত অদিত্য রায় এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।

নিহত মাঝারুলের চাচা আজমল বলেন, মাঝারুলের শরীরে গুলি লাগার পর এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আমরা তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করি। অবস্থার অবনতি হলে  মাঝারুলকে নিয়ে রংপুর মেডিকেলে রওনা হই। কিন্তু পথেই তিনি মারা যান।’

আদিত্য রায়ের চাচাতো ভাই রতিকান্ত রায় বলেন, ‘আমার ভাই এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। ভোট উৎসবের অংশ হতে সে কেন্দ্রের পাশে গিয়েছিল। কিন্তু তাকে লাশ হয়ে ফিরতে হলো।’

রহিমা বেগমের স্বামী আব্দুল বাকী জানান, ‘তার স্ত্রী কৌতুহলবশত ভোট কেন্দ্রের সামনে যায়। এ সময় গুলি চললে আহত হন রহিমা। পরে তাকে রংপুর মেডিক্যালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।’

এর আগে রোববার রাতে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত চৌকিদার খগেনের সূত্রে জানা যায়, ভোট শেষ হওয়ার পর ফলাফল ঘোষণা করতে দেড়ি করছিলেন প্রিজাইডিং অফিসার। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে চশমা প্রতীকের (স্বতন্ত্র) চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুজ্জামানের সমর্থকদের কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে প্রিজাইডিং অফিসার নৌকার প্রার্থী শহীদ হোসেনকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেন।

ফলাফর ঘোষণার পর কিছু এলাকাবাসী ভোটকেন্দ্র অবরুদ্ধ করে। প্রিজাইডিং অফিসার সেখান থেকে চলে যান। তবে একটি রুমে তিনজন পুলিশ সদস্যসহ ১৫/১৬ জন আনসার সদস্য আটকা পরে। 

খগেন জনান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভোটে দায়িত্বরত সদর উপজেলা ইউএনও আবু তালেব মো. সামসুজ্জামান কিছু পুলিশ ও ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্যসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় বিজিবি সদস্যরা। এতে ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোনোভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলো না। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি সদস্যদের ছোড়া গুলিতে নিহতের ঘটনা ঘটে। তিন জনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে। রহিমা বেগমের মৃতু্র বিষয়টি আমি শুনেছি।’ 

আরো পড়ুন:  ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ১, আহত ৪