সারা বাংলা

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিপজ্জনক মোড় ‘তেরমাইল’ 

‘তের মাইল’। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এ জায়গাটির নাম শুনলেই আঁতকে ওঠেন নাজনীন হোসেন। এই নামটির সঙ্গে এক দু:সহ স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে তার। 

তিনি এখানেই হারিয়েছেন তার স্বামী একাত্তরের বীর যোদ্ধা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার হোসেন শামীমকে। নিজেও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। 

শুধু নাজনীন হোসেনের জন্য নয় ‘তের মাইল’ জায়গাটি বহু মানুষের আতঙ্কের নাম। প্রতিদিনই কোন না কোন দুর্ঘটনা ঘটছে মহাসড়কের ওসমানীনগরের এই ‘তের মাইল’ নামক মোড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ওসমানীনগর ও দক্ষিণ সুরমা অংশে প্রাণহানী লেগেই আছে। এরজন্য অপ্রশস্ত সড়ক, অপ্রশিক্ষিত চালক, বেপরোয়া গতি, আঁকাবাঁকা সড়ক, যত্রতত্র স্পিড ব্রেকার, সাইনিং রোড মার্কিং এর অভাবকে দায়ি করছেন ন্থানীয়রা।  

অন্যদিকে সিলেট ঢাকা মহাসড়কের ওসমানিনগর থানাধীন অংশে গত এক বছরে প্রায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ বিভাগের একটি সূত্র। আর পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেকেই। এসব দুর্ঘটনার বেশিরভাগ ঘটছে ভোর বেলা।

ওসমানীনগর উপজেলার তের মাইল ব্রাম্মণশাসন এলাকার সমাজকর্মী সাব্বির আহমদ জানান, তাদের বাড়ির সামনে মহাসড়কের ‘তেরমাইল’ মোড়টি বিপজ্জনক। যখন বড়মাপের কেউ মারা যান তখন আলোচনায় আসে তেরমাইল মোড়টি। তখন আলোচনা হলেও এখানকার ত্রুটি সারাতে কেউ উদ্যোগ নেয়না।

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাজী মো. ময়নুল ইসলামের অভিমত দূরপাল্লার বাসগুলো দীর্ঘ সড়কে এক ড্রাইভার দিয়ে পরিচালনা না করে যেন দু’জন ড্রাইভার দেওয়া হয়। অনেক সময় চালকের অসেচতনতার অভাবে দুর্ঘটনা ঘটে বলে স্বীকার করে ময়নুল বলেন, আঁকাবাঁকা দূর করাসহ সড়কের অন্যান্য ত্রুটি সারানোরও ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

সিলেট হাইওয়ে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ জানান, ঢাকা সিলেট মহাসড়কে ১৮টি মোড় রয়েছে। যেগুলো বিপজ্জনক। তবে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এই সমস্যা আর থাকবে না। তিনি যেখানে  রোড মার্কিংসহ চালকদের সতর্কতামূলক চিহ্ন দেওয়া দরকার। আমরা সওজের নজরে দিলে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, বর্তমানে কুয়াশা পড়ছে, এরজন্য একটু দুর্ঘটনা বাড়ছে। তবে বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনক ওভারটেকিং রোধে হাইওয়ে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।  

সড়ক বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প চলমান। এমনিতেই মোড়গুলো আর থাকবে না। তবুও বিপজ্জনক জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হবে।