সারা বাংলা

হাতি হত্যায় শেরপুরে ছায়া তদন্তে বিএনসিএ 

শেরপুরসহ দেশজুড়ে একের পর এক হাতিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণি হত্যার ঘটনার কারণ উদঘাটনে ছায়া তদন্ত করছে বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)। তদন্তের অংশ হিসেবে শেরপুরে হাতি হত্যার ঘটনাস্থলসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর ঘুরে বেড়িয়েছেন জোটের প্রতিনিধিরা। 

দুই দিনব্যাপি তদন্ত কার্যক্রম শেষে শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) জোট প্রধান পরিবেশবিজ্ঞানী ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের নেতৃত্বে ঢাকা থেকে আসেন ৬ সদস্যের তদন্ত দল। দলের অন্য সদস্যরা হলেন- সেভ আওয়ার সি এর মহাসচিব মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক, প্রাণ ও প্রকৃতি সাংবাদিক কেফায়েত শাকিল, গ্রীণ ফাইটিং মুভমেন্টের সভাপতি নাবিল আহমদ, সবুজ আন্দোলনের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার ও অর্থ পরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন (রূপা)।

অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, শেরপুরের আগে কক্সবাজারেও ছায়া তদন্ত করেছেন তারা। দুটি জেলার তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যসহ যাবতীয় তথ্য যাচাই শেষে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বিএনসিএ।

ছায়া তদন্তে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট সব মহলের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য হিসেবে বলতে পারি, বন, বনভূমি ও বন্যপ্রাণি রক্ষায় বনবিভাগ ক্রমাগতভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। বনের জায়গায় অবৈধ দখলই হাতিসহ বন্যপ্রাণির জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, বনবিভাগ হাতি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের মাধ্যমে সোলার ফেন্সিং পদ্ধতি সংযুক্ত করেছিলো, এখন সেটির কার্যকারিতা নেই। তারা বরাবরই প্রকল্পের মাধ্যমে বন-বন্যপ্রাণি রক্ষার চেষ্টা করে, প্রকল্প শেষ হলে বন আবার অনিরাপদ হয়ে পড়ে। এখানেও তেমন ঘটেছে। 

বনের জায়গায় সাধারণ মানুষের বসবাস বন উজাড় এবং বন্যপ্রাণির জন্য সবচেয়ে হুমকির কারণ বলেও জানান ছায়া তদন্ত কমিটির প্রধান।

বন ও বন্যপ্রাণি রক্ষায় কয়েকটি পরামর্শও তুলে ধরেন বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোটের আহ্বায়ক। সেগুলো হলো- হাতি হত্যার ঘটনাগুলোর বিচারবিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করা; হাতি হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা; অবৈধ দখলদারদের খাস জমিতে পুনর্বাসন; প্রকল্পের মাধ্যমে নয়, বন্যপ্রাণি রক্ষার জন্য নিয়মিত বাজেট রেখে বনবিভাগের মূল দায়িত্ব হিসেবে নির্ধারণ করা; বনে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করা; বনবিভাগের পর্যাপ্ত জনবল দেওয়া এবং এলিফ্যান্ড রেস্পন্স টিমতে আর্থিক সুবিধা বাড়ানো এবং বন ও বন্যপ্রাণি রক্ষায় গণমাধ্যমকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করা।