সারা বাংলা

যৌতুকের দাবিতে নববধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ

বিয়ের মেহেদীর রং না মুছতেই লাশ হতে হলো সুমাইয়া খাতুনকে (১৮)। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, সুমাইয়া আত্মহত্যা করেছেন। তবে সুমাইয়ার বাবার দাবি, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের পারমিটন গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে আগুনে ঝলসানো সুমাইয়াকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে তার মৃত্যু হয়। 

নিহত সুমাইয়া খাতুন দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের আয়েম আলীর মেয়ে এবং মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের পারমিটন গ্রামের সাদিকুল ইসলামের স্ত্রী।

আমলা পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই কামরুজ্জামান জানান, সকালে ওই গৃহবধূ নিজ কক্ষে গায়ে ডিজেল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে স্থানীয়রা খবর দেয়। পরে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

এএসআই কামরুজ্জামান আরও জানান, প্রতিবেশীদের ভাষ্যমতে গত ১৬ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে ইসমাইল হোসেনের ছেলে সাদিকুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমাইয়ার। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার সকালে গায়ে আগুন দিলে সুমাইয়ার মামা জালাল হোসেন স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকেলে তার মৃত্যু হয়। 

সুমাইয়ার বাবা আয়েম আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘বিয়ের তিন দিন পরে জামাতা জানায় টাকার খুব দরকার। ব্যবসা করার জন্য টাকা লাগবে। এজন্য টাকা নিয়ে যেতে সুমাইয়াকে চাপ দেয়। কিন্তু আমি গরীব মানুষ হওয়ায় ১ লাখ টাকা একবারে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করি। এ নিয়ে সুমাইয়ার স্বামী তার ওপর নির্যাতন চালায়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও টাকা নিতে পাঠিয়েছিলো সুমাইয়াকে। চারদিন পর কিছু টাকা নিয়ে স্বামীর বাড়িতে ফিরে যায়। স্বামীর বাড়িতে আসার পর সব টাকা না দেওয়ার কারণে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন সুমাইয়াকে গালমন্দ ও মারধর করে। যৌতুকের এক লাখ টাকা না পেয়ে আমার মেয়েকে ওরা পরিকল্পিতভাবে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।’ 

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মস্তফা জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। তিনি জানান, নিহতের পরিবারের লোকজন থানায় এসেছেন। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। 

এ ঘটনার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।