সারা বাংলা

মাছবাজারে ‘জিম্মি’ মহাসড়ক

শ্রমিক অধ্যুষিত সাভারের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের কোল ঘেঁষে বসা মাছবাজার যাত্রীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারের একটি অংশ ফুটপাত ছাড়িয়ে মহাসড়কে উঠে আসায় প্রতিদিন জায়গাটিতে যানজট তৈরি হচ্ছে। এতে কারখানাগামী শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে।

বাজার পরিচালনাকারীরা যানজট সৃষ্টির কথা স্বীকার করলেও সমস্যা সমাধানে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ পরস্পরের ওপর দায় চাপিয়েছে।

প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায় আশুলিয়া থানা মৎস্য আড়ত মালিক সমিতির আয়োজনে এই বাজার বসছে। শুরুতে বাজারে লোকসমাগম কম হলেও এটি মাছের আড়ত হওয়ার পর বিশৃঙ্খলা বেড়েছে।

মহাসড়কে চলাচলকারীদের অভিযোগ, নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন লাখ লাখ শ্রমিক ও সাধারণ মানুষসহ প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক যানবাহন চলাচল করে। ঢাকা, আব্দুল্লাহপুর ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ এই সড়কের মাধ্যমেই হয়েছে। কিন্তু বাইপাইল ত্রিমোড়ে যানজটে দীর্ঘসময় যানবাহনগুলোকে  আটকে থাকতে হচ্ছে। এর মূল কারণ মাছের বাজার- বলছেন স্থানীয়রা।  

পোশাক শ্রমিক লাইলি আক্তার বলেন, ‘৮টার ভেতরে আমার গার্মেন্টসে যেতে হয়। সেই হিসাবে সকাল ৭টার দিকে বাসা থেকে বের হই। কিন্তু গত কয়দিন ধইরা বাইপাইলে জ্যামের কারণে গার্মেন্টসে যাইতে দেরি হইতেছে। সব মাছের গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করায়া মাছ নামায়। রাস্তার তিন ভাগের দুই ভাগই আটকে রাখে ওরা।’

যানজটের বিষয় স্বীকার করে আশুলিয়া থানা মৎস্য আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাদশা বলেন, ‘হঠাৎ করে আমাদের আগের জায়গাটা একর হয়ে যাওয়ায় অস্থায়ীভাবে এখানে বাজার বসছে।  আমরা খুব কষ্টে আছি। আমাদের তো বিশাল জায়গার দরকার। এই বাজারের পিছনে একটা জায়গায় বালু ভরাট করছি। ৮-১০ দিনের মধ্যেই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’

‘সকালের দিকে মাছের আড়তের লোকজন যানজট তৈরি করে। সেখানে আমাদের একজন ট্রাফিক পুলিশ থাকে। কিন্তু তার একার পক্ষে বিশৃঙ্খলা সামলানো সম্ভব না। আমাদের পক্ষেও সেখানে একটি স্পেশাল টিম দেওয়া সম্ভব না। তবে হাইওয়ে থানা পুলিশ চাইলে এর সমাধান করতে পারে।’ বলেন সাভার ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ আব্দুস সালাম। 

এ প্রসঙ্গে সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) আতিকুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আড়তের সামনে কয়েকবার গাড়ি রেকারিং করিয়েছি। সমস্যা হলো, একটি গাড়ি যদি আজ রেকার করে জরিমানা করি, পরে সেই গাড়ি আর আসে না। নতুন আরেকটি গাড়ি সমস্যা তৈরি করে। ফলে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া যায় না৷ তবে ট্রাফিক পুলিশ চাইলে বিষয়টি সমাধান করতে পারে। তাদের নাকের ডগায় সকালে এসব ঘটনা ঘটে।’