নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নাটোরের উত্তরা গণভবনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভবনটিকে ফুলে ফুলে সাঁজানো হয়। স্থানীয়দের দাবি, আবারো যেন এ গণভবনে মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে দিঘাপতিয়া রাজবাড়ীকে উত্তরা গণভবন হিসেবে নামকরণ করেন। এর একমাস পরে বঙ্গবন্ধু উত্তরা গণভবনের মূল প্রাসাদের ভেতরে মন্ত্রিসভার একটি বৈঠকও করেন। সর্বশেষ এখানে ১৯৯৬ সালে এখানে মন্ত্রীপরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকেই ঢাকার বাহিরে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বাসভবন হিসেবে পরিচিত এই রাজবাড়িটি।
জানা যায়, নাটোর ছিল বঙ্গবন্ধুর অনেক পছন্দের জেলা। নাটোর নিয়ে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখতেন তিনি। বঙ্গবন্ধু নাটোরকে উত্তরবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র করতে চেয়েছিলেন। দেশের দ্বিতীয় রাজধানী করার স্বপ্নও ছিল তার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উত্তরা গণভবনে সফরকালে রাজবাড়ি চত্ত্বরে একটি ‘হৈমন্তী’ গাছের চারাও রোপন করেছিলেন।
উত্তরা গণভবনটি ৪২ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। বিশালাকার এ রাজবাড়িতে রয়েছে দিঘি, বাগান, ইটালিয়ান গার্ডেন, চিড়িয়াখানা, নতুন সংগ্রহশালাসহ দেশ-বিদেশের হরেক ও বাহারী রকমের গাছের মেলা। পুরো গণভবনের চারপাশে উঁচু দেওয়াল দিয়ে ঘেরা।
নাটোর শহর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার উত্তরে ইতিহাস খ্যাত দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি তথা ‘উত্তরা গণভবন’ অবস্থিত। বর্তমানে এ গণভবন জনপ্রিয় এক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। যদিও করোনাকালে দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ ছিল এটি।
গণভবন প্রাঙ্গণে আছে ইতালি থেকে সংগৃহ করা মনোরম ভাস্কর্যে সজ্জিত বাগান। যেখানে রয়েছে বিরল প্রজাতির নানা উদ্ভিদ। গণভবনের সামনের মাঠে ফুটেছে দৃষ্টিনন্দন গাঁদা ও গ্লাডিওলাস ফুল। গণভবনে ঢুকলেই যেন পর্যটকদের ফুলের সৌন্দর্য ও সুবাস দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। অন্যদিকে দর্শানার্থীরাও গণভবনে ঢুকেই আগে ফুলের কাছে গিয়ে ছবি তোলেন।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মো.শামীম আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে ৯ ফ্রেব্রুয়ারি এই রাজবাড়িটির নাম উত্তরা গণভবন করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ রাজবাড়িটি এক গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য রয়েছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, নাটোরের উত্তরা গণভবন আঠারো শতকে দিঘাপতিয়া জমিদারদের বাসস্থান হিসেবে নির্মিত হয়। দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা দয়ারাম রায় ১৭৩৪ সালে প্রায় ৪২ একর জমির ওপর রাজবাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর এই জমিদার বংশের লোকরা ভারতে চলে যান।