ময়মনসিংহে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জেলার বিভিন্ন বাজার ও রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুর মানুষকে কামড়ানোর পাশাপাশি গৃহপালিত গরু-ছাগলকেও কামড়াচ্ছে।
আক্রান্তের শিকার সবচেয়ে বেশি সদর উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। এছাড়াও কুকুরে কামড় খেয়ে ভ্যাকসিন নিতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে জেলা শহরে আসছেন মানুষ।
ময়মনসিংহে কুকুর-বেড়ালে কামড়ানো রোগীদের সরকারি ভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হয় একমাত্র এসকে (সূর্য কান্ত) হাসপাতালে। এছাড়াও বেসরকারি সংস্থা ও ক্লিনিকেও ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
এসকে হাসপাতালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে কুকুর-বেড়ালে কামড়ানো রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১২ হাজার। কিন্তু এ বছর চলতি মাস পর্যন্ত কুকুর-বেড়ালের কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। আক্রান্তদের ৯৫ ভাগই কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে উল্লিখিত তথ্য সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের। এর বাইরেও যারা প্রাইভেটে চিকিৎসা নিয়ে ভ্যাকসিন দিয়েছেন তাদের তথ্য সরকারি হাসপাতালের কাছে নেই।
ময়মনসিংহের এস কে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. প্রজ্ঞানন্দ নাথ জানান, সম্প্রতি কুকুরে কামড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হাসপাতালে প্রতিদিন ভ্যাকসিন নিতে আসেন গড়ে ৫০-৬০জন।
তিনি বলেন, ‘কুকুর কামড়ালে মূলত দুই ধরনের ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। একটি পুশ করা হয় চামড়ার নিচে। আরেকটি পুশ করা হয় মাংসে। এই হাসপাতালে চামড়ার নিচের ভ্যাকসিন পুশ করা হয়। এটি নিতে হয় চার বার।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তায় কুকুর দেখলে তাকে কোনোভাবে উত্তেজিত করা যাবে না। তারপরও যদি আক্রমণ করে, তাহলে প্রথমে আক্রান্ত স্থানে কাপড় কাঁচার সাবান দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ঘষা দিতে হবে। এরপর যতদ্রুত সম্ভব আক্রান্তকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।’
এদিকে নগরীতে কুকুরের উৎপাত বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল। তারা বলছেন নগরীর কাচারিঘাট, আরকে মিশন রোড মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে কুকুরের দল ঘুরে বেড়ায়। এতে পথচারীরা রীতিমত ভয় পায়।
সপ্তাহখানেক আগে ময়মনসিংহ নগরীর কাচারীঘাট এলাকায় কুকুরে কামড়ে আক্রান্ত হন অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক। পরে তিনি এস কে হাসাপাতালে গিয়ে ভ্যাকসিন নেন। মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সম্প্রতি কাচারীঘাট এলাকায় একাধিক ব্যক্তি কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা দীপক মজুমদার বলেন, ‘উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনার কারণে গত ৪/৫ বছর ধরে কুকুর নিধন বন্ধ আছে। তবে পাগলা কুকুর নিধনে কোনো বাঁধা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলাতংক রোগ প্রতিরোধে কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। গত বছর তিন হাজার ৩৩২টি কুকুরকে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।’