সারা বাংলা

পদ্মা সেতু: মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় গোটা জাতি

পদ্মার বুকে স্বপ্নের সেতু এখন পুরো দৃশ্যমান। যান চলাচলের মাহেন্দ্রক্ষণ দেখতে অপেক্ষা করছে গোটা জাতি। চলতি বছর জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে চলছে শেষ সময়ের কাজ। ফেব্রুয়ারি মাসের অগ্রগতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৯৭ শতাংশ। বাকি আছে মাত্র ৩ শতাংশ।

পদ্মা সেতুটি দ্বিতলবিশিষ্ট। এর ওপর দিয়ে চলাচল করবে যানবাহন, নিচ দিয়ে চলবে রেল। সেতুটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। এ অঞ্চল হবে দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোন।

এর আগে, গেলো বছরের সালের ২৩ আগস্ট পদ্মা সেতুতে শেষ রোড স্লাব বসানো হয়। এরপরই সেতুটি মাওয়া-জাজিরা সড়কপথে সংযুক্ত হয়।

সর্বশেষ সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব অনুসারে, আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। এরপরও প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর থাকবে। তবে সে সময়টা সেতুর কোনো ত্রুটি দেখা দিলে তা মেরামত ও ঠিকাদারের পাওনা মেটানোর জন্য নির্ধারিত।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, আগামী ২৩ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে এখন শেষ পর্যায়ের কর্মযজ্ঞ চলছে। বর্তমানে সেতুতে কার্পেটিং তথা এজফল্ট কাজের অগ্রগতি হয়েছে ২৭ দশমিক ৯৭ ভাগ, ভায়াডাক্টে কার্পেটিং ৫৬ দশমিক ২২ শতাংশ, ওয়াটারপ্রুফিং ওয়ার্কের অগ্রগতি হয়েছে ৩৯ দশমিক ৮৪ ভাগ, গ্যাস পাইপলাইনের অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ দশমিক ৯৮ ভাগ; ৪০০ কেভি টিএল প্লাটফর্ম ৭৬ শতাংশ, মার্চ থেকেই পুরো সেতুজুড়ে স্থাপন করা হবে ল্যাম্পপোস্ট, দুই পাড়ে দুটি বিদ্যুৎ সাব স্টেশন ও রেলওয়ে ভায়াডাক্টে প্যারাপেটরের অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ শতাংশ। সবমিলিয়ে ৯৭ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, মার্চ-এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পদ্মা সেতুতে কার্পেটিংয়ের কাজ সম্পন্ন হবে। এপ্রিলে মেমব্রেন, অ্যালুমিনিয়াম রেলিংয়ের সব কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২৩ জুন পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

পদ্মা সেতুকে ঘিরে এরই মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা বাড়তে শুরু করেছে। বাড়বে কর্মসংস্থানও। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেতুটির ব্যয় করা হয়েছে ২৬ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৩১ কোটি টাকা।