‘আমার হাদিস কথা কয় না ক্যা, আমার হাদিসরে আমার কোলে দে তোরা। ও হাদিস, তুই আমারে মা কইয়া ডাক দেওনা ক্যা। ও বাবারা তোমরা তো সবাই কথা কও, প্রত্যেকবার হাদিস বাড়িতে আইসা বাড়ির উঠান থেকে আমারে মা মা কইয়া ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢুকত। এইবার আইসা হাদিস আমারে মা কইয়া ডাক দেয় নায়। আমার হাদিস ছাড়া আমি বাইচ্চা থাকমু কেমনে। আল্লাহ তুমি আমার প্রাণ নিয়ে হাদিসকে ফিরাইয়া দাও।’
সোমবার (১৪ মার্চ) রাতে ছেলের লাশ বাড়িতে পৌঁছালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব বলেন হাদিসুর রহমানের মা আমেনা বেগম। এসময় তার আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
আমেনা বেগম বলেন, ‘হাদিস প্রতিবার বাড়িতে আসলে দিনভর আমার আশপাশেই থাকত। সামান্য জ্বর-সর্দি হলেও ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতো। সেই হাদিস এখন চুপ।’
হাদিসুরের ছোট বোন সানজিদা আক্তার বলেন, ‘ভাই এবার ছুটিতে বাড়িতে আসলে বিয়ে করত। সব আয়োজন করা ছিল। কিন্তু ভাই আর বেঁচে নেই।’
এর আগে, সোমবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে হাদিসুরের মরদেহ বহনকারী ফ্রিজারভ্যানটি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে নিজের বাড়িতে পৌঁছায়।
এর আগে, দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় হাদিসুরের নিথর দেহ।
উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ ইউক্রেনে এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বিস্ফোরণে মারা যান জাহাজটির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান।
আরও পড়ুন: চিরঘুমে নিজ উঠোনে হাদিসুর