সারা বাংলা

বাবা-মেয়ের গজল ও গানে মুগ্ধ মানুষ 

শাহ আলী (৬০)। হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার পুরান পাথাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর। প্রায় ৫ শতকের জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘর। এখানেই দুই ছেলে ও চার মেয়েসহ ৮ জনের বসবাস। এরমধ্যে জন্মের ২ মাসের মাথায় টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারায় তার মেয়ে সাদিয়া আক্তার (১১)। টাকার অভাবে করাতে পারেননি মেয়ের চিকিৎসা। 

নিজেরও বয়স বাড়ায় আগের মতো করতে পারেন না দিনমজুরের কাজ। থমকে যাওয়া সংসারের হাল ধরতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই মেয়েকে নিয়ে নেমে পড়েন রাস্তায়। লোকজন তাদের গজল ও গান শুনে যে অর্থ দেন, তাই দিয়ে চলে ৮ জনের টানাপোড়েনের সংসার। বাবা-মেয়ের গজল ও গানে মুগ্ধ হচ্ছেন লোকজন।

শাহ আলী বলেন, ‘৬ মাস ধরে অন্ধ মেয়েকে নিয়ে রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড এবং মাজারে গজল ও গান গেয়ে বেড়াচ্ছি। লোকজন আর্থিকভাবে সহায়তা করছেন। আমার মেয়েকে সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড। একইসঙ্গে মেয়ের চিকিৎসার জন্য সরকার বা ব্যক্তির সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।’

সাংবাদিক মোতাব্বিার হোসেন কাজল ও মুহিন শিপন বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের প্ল্যাটফর্মে বাবা ও মেয়ের কণ্ঠে গজল ও গান শুনেছি। অসাধারণ কণ্ঠ। তাদের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে লোকজন ৫ থেকে শুরু ২০ টাকা পর্যন্ত সহায়তা করেন। তারা এভাবে স্থানে স্থানে গিয়ে গজল ও গান পরিবেশন করে টাকা রোজগার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সুচিকিৎসা পেলে অন্ধ মেয়ের চোখ ভাল হবে মনে করছেন বাবা শাহ আলী। 

বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ বলেন, শাহ আলীর ভিটেমাটি ছাড়া তেমন কোন জমিজমা নেই। তিনি অন্ধ মেয়েকে নিয়ে গজল ও গান গেয়ে বেড়ান নানা স্থানে। লোকজন তাদেরকে সহযোগীতা করেন।