সারা বাংলা

চিকিৎসক হয়ে বাবার স্বপ্নপূরণ করতে চান আমিনা

লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর দুইজন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ক্যানসারে আক্রান্ত সবজি বিক্রেতা আ. হালিমের মেয়ে আমিনা খাতুন সুযোগ পেয়েছেন নীলফামারি মেডিক্যাল কলেজে। এখন চিকিৎসক হয়ে বাবার মরণব্যাধি ক্যানসার চিকিৎসা করতে চান তিনি।

আ. হালিম পাঁচ সন্তানের জনক। ২০১৬ সাল থেকে ক্যানসারে আক্রান্ত হন তিনি। স্থানীয় বড়খাতা বাজারে দোকান করেন তিনি। দিন শেষে বেচাকেনা করে যা আয় হয় তাই দিয়ে সংসার চালান তিনি। আমিনারা তিন বোন দুই ভাই। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। বড় ভাই সাজু জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। ছোট ভাই কলেজে পড়ছেন। চতুর্থ আমিনা এবার মেডিক্যালে ভর্তি হবেন। আর সবার ছোট বোন স্কুলে পড়েন।

সম্প্রতি কথা হয়েছে আমিনা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি আমাদের লেখাপড়া চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি আমার বাবার জন্য গর্ববোধ করি। বাবার চিকিৎসা করাতে আমাদের পরিবারকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। ঠিকঠাক চিকিৎসা হচ্ছে না। খরচ অনেক। সেই সময় বড় ভাই সাজু পরিবারের হাল ধরেন। টিউসনি ও কোচিং করিয়ে বাড়ির খরচ চালাচ্ছেন তিনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘জীবনের সব পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছি। বাবার উৎসাহে লেখাপড়া করেছি। বাবা কখনো কোনো কিছুর অভাববোধ করতে দেননি আমাদের।’

আমিনা বলেন, ‘আমার বাবা (আ. হালিম) বড়খাতা বাজারে খুদ্র সবজি বিক্রেতা। মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য কখেনো কোচিং করিনি। কোচিং করার কোনো অর্থ ছিলো না আমার। বাড়িতেই লেখাপড়া করেছি। প্রস্তুতি নিয়েছি।’ 

আ. হামিদ বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখতাম আমার মেয়ে চিকিৎসক হবে। আল্লাহ আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করছেন। এতে আমি অনেক খুশি।’

আমিনা বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের লেখাপড়া করেছেন। সেই কলেজের প্রধান শিক্ষক জোবায়দুল বারি বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের কলেজ থেকে এক দুইজন ভালো ভালো কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়। এবারও আমাদের এখান থেকে দুইজন মেয়ে মেডিক্যালে সুযোগ পেয়েছে। এতে আমি গর্বিত। তবে, আমিনার বাবার আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় শঙ্কিত। দিন দিয়ে দিন চলে আমিনাদের।’