সারা বাংলা

নরসিংদীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঈদ আনন্দ

নরসিংদীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বইছে উৎসবের আমেজ। আজ শুক্রবার (৬ মে) ঈদের চতুর্থ দিনেও কমতি নেই দর্শনার্থীর।  প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রই এখন জমজমাট।

ঈদের পরদিন থেকে দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠেছে এসব বিনোদন স্থান। এদিকে ঈদকে ঘিরে নতুন নতুন রাইডস সংযোজনের পাশাপাশি বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পার্কগুলো।

নরসিংদীতে বেশ কয়েকটি বিনোদনকেন্দ্র রয়েছে। আন্তর্জাতিকমানের বিনোদন কেন্দ্র নরসিংদী সদর উপজেলার পাচদোনায় ‘ড্রিম হলিডে পার্ক, মাধবদী হেরিটেক রির্সোস, রায়পুরা উপজেলার মরজাল ওয়ার্ন্ডার পার্ক, পান্থশালা, শিবপুর উপজেলায় আন্দন পার্ক, চিনারদী বিল, সোনামুখী টেক, মনোহরদী উপজেলায় বৈশাখী পার্ক বেলী ও বেলাব উপজেলায় প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের প্রাচীন বাংলার প্রত্ন জাদুঘর উয়ারী-বটেশ্বর।

এছাড়াও রয়েছে উন্মুক্ত পরিবেশে নরসিংদীর নাগরিয়াকান্দি মেঘনাপাড় শেখ হাসিনা সেতু, বাদুয়ারচর ব্রিজ এবং পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর সেতু।

ঈদে বর্ণিল সাজে সেজেছে ড্রিম হলিডে পার্কটি। শিশু ও বড়দের নানা আকর্ষণীয় রাইডের পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে সংযোজিত হয়েছে নতুন রাইড স্কাই ট্রেন। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের আদলে তৈরি স্থাপনা ছিল দর্শনার্থীদের জন্য নতুন আকর্ষণ। এছাড়া বুলেট ট্রেন, এয়ার বাইসাইকেল, সোয়ান বোট, ওয়াটার বোট, রোলার কোস্টার, সুইং চেয়ার, স্পিডবোটসহ আন্তর্জাতিকমানের বিভিন্ন রাইডস উপভোগের পাশাপাশি সুইমিং পুলেও উচ্ছাসে মেতে ওঠেন দর্শনার্থীরা।

পার্কটিতে রয়েছে একাধিক পিকনিক ভেন্যু, শ্যুটিং স্পট, ২৫টি অ্যাডভেঞ্চার রাইডস, ওয়েভ ওয়াটার পার্ক ও এক্সক্লুসিভ কটেজ।  যার মধ্যে ড্রামি আইনকন (জায়ান্ট হুইল), ডাইনোসর অ্যাটাক, ক্যাবল কার, অত্যাধুনিক সুইমিংপুল, ডেমু ট্রেন, আইস পাহাড়, সুইং কার, হেলিকপ্টার রেসকিউ ও রিভার ক্রুজ, রকিং হর্স, চিলড্রেন ক্যাসেল, জাম্পিং হর্স, চাইল্ড টয় ট্রেন, ফ্রি কেসল ফর চিলড্রেন, বাম্পার বোট, বাম্পার কার, বুল রাইড ও ওয়াটার বাম্পার কার অন্যতম। আছে এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যেরে কৃত্রিম নদী, পাহাড়, জীবজন্তু ও বনমানুষের দ্বীপ নিয়ে ড্রিম সাফারি পার্ক ও ওয়েব ওয়াটার পার্ক।

পার্কটি ফুল, ফলদ, বনজ ও সৌন্দর্যবর্ধক গাছের পাশাপাশি চিরসবুজ বাগানে বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিনোদন কেন্দ্রটিতে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে মনোহর প্রাকৃতিক পরিবেশের নিখুঁত সমন্বয় তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি পদ্মা সেতুর রেপ্লিকা, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, সাবমেরিন, ভাস্কর্য রেইনবো গেট, ডাইনোসর, চেইনের তৈরি পালকি, রিকশা, ফিশ কর্নার, ক্যানেল, লন্ডন ব্রিজ, হার্ট শেড, ফাউন্টেন, ভূতের বাড়ি, ফানি মিউজিক গ্রুপ, সিডনি ব্রিজ যে কোনো বিনোদনপ্রেমীকে আকৃষ্ট করবে।

পার্কটিতে দেখা গেছে শিশু রাইডগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকছে পার্কটি।

পার্কে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আত্মীয় স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে এখানে আসা। দীর্ঘ দুই বছর করোনায় ঘরবন্দি থাকার পর এ ঈদে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে এসে খুবই আনন্দ হলো।’

কাপাসিয়া থেকে আসা ছোট শিশু ইশামনি বলেন, ‘আমি মা-বাবার সাথে এখানে এসেছি। এই পার্কে বিভিন্ন রাইডসে উঠেছি।  খুব মজা পেয়েছি।’

ড্রিম হলিডে পার্কের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, এবারের ঈদে আমাদের নতুন আকর্ষণ স্কাই ট্রেন। যেটা পাহাড়ের ওপর স্থাপিত একটি স্টেশন থেকে পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি একটি ব্রিজ দিয়ে চলাচল করবে। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে আমরা পার্কের সব রাইডে নতুনত্ব ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

ড্রিম হলিডে পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা বলেন, করোনার কারণে ঘরবন্দি থাকায় গত দুই বছর মানুষ ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি। এবারের ঈদে দর্শনার্থীর আগমন হবে সেদিক চিন্তা করে আমরা ড্রিম হলিডে পার্কে  কিছু নতুন রাইড স্থাপন করছি।

তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে পার্কে দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। করোনার কারণে বিগত দিনে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে- আশা করি তা আমরা কিছুটা হলেও লাঘব করতে পারব।