সারা বাংলা

আসানি: সাতক্ষীরায় বৃষ্টি শুরু

ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে মঙ্গলবার (১০ মে) বিকেল থেকে সাতক্ষীরায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় হালকা থেকে দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এদিকে সুন্দরবন সংলগ্ন জেলার শ্যামনগর উপজেলার ৫ ও ১৫ নম্বর পোল্ডারের উপকূল রক্ষা বাঁধের ১৭টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

খোলপেটুয়া, কপোতক্ষ ও কালিন্দি নদী থেকে লোকালয়কে সুরক্ষা দেওয়া বাঁধের অনেক অংশ নিচু হয়ে গেছে। এছাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বাড়লে তৎসংলগ্ন এলকার নদীর পানি বাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে প্রবেশের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দাবি, সমন্বয়ের ভিত্তিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে মাটি ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।

শ্যামনগর উপজেলার উপকূলবর্তী কাশিমাড়ী, বুড়িগোয়ালীনি, গাবুরা ও কৈখালীর বিভিন্ন অংশ সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঢেউয়ের তোড়ে কৈখালী বিজিবি ক্যাম্প, ভামিয়া ও হরিশখালী এলাকার বাঁধ রীতিমত সরু আইলে পরিণত হয়েছে। 

শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম জানান, তার এলাকার অন্তত ১২টি পয়েন্টের কয়েক কিলোমিটার বাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্বাভাবিকের তুলনায় জোয়ার বাড়ার সঙ্গে ঝড়ো বাতাস একসঙ্গে আঘাত করলে গোটা ইউনিয়ন পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করে ইউনিয়নের প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে ১৫টিরও বেশি সাইক্লোন সেন্টারসহ দ্বিতল ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

উপজেলার কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, সীমান্তবর্তী কালিন্দি নদীর অব্যাহত ঢেউয়ে তৎসংলগ্ন বাঁধের বিভিন্ন অংশ নিঁচু হয়ে গেছে। ভেতরের অংশে আউট ড্রেন ছাড়া চিংড়ি ঘের পরিচালনার কারণে এসব অংশের বাঁধের দু’পাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তা সরু হয়ে ভীতি ছড়াচ্ছে। 

সাতক্ষীরা পাউবো-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার সুরক্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ ১৭টি স্থান চিহ্নিত করে তা মেরামতের কাজ চলছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারসহ এলাকাবাসীকে এসব অংশের কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রায় ৩৫ হাজার সিনথেটিক বস্তা বালু ভর্তি অবস্থায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। 

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় আসানি মোকাবিলায় জেলার ২৮৭ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। এর মধ্যে উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরে ১৮১ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। অপরদিকে, আশাশুনিতে ১০৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত হয়েছে। যাতে ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।