সারা বাংলা

তিন যানবাহনের সংঘর্ষে নিহত ৯, আহত ২৫

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় বাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন, এক দম্পতিসহ নয় জন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে ২৫ জন।

শ‌নিবার (১৪ মে) সকাল ১১টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা ও কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  

নিহতরা হলেন, কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা গ্রামের ফিরোজ মোল্লা, তার স্ত্রী রুমা বেগম, অনিক মিয়া, জেসমিন আক্তার, গোপালগঞ্জ শহরের ডা. বাসুদেব সাহা, তার স্ত্রী শিবানী সাহা, ছেলে স্বপ্নিল সাহা, প্রাইভেটকারের চালক ঢাকার আদাবর থানার দোয়ারী এলাকার মো. আজিজ মিয়া। নিহত একজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। 

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে প্রাইভেটকারে করে ডা. বাসুদেব সাহা স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিকে থেকে আসা মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয় প্রাইভেটকারটি। এ সময় পিছন দিক থেকে আসা পাথরঘাটা থেকে ঢাকাগামী রা‌জিব প‌রিবহণের বাস মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারে ধাক্কা দেয়। 

এ সময় প্রাইভেটকার দুমড়ে-মুচড়ে মহাসড়কের পাশে ধান মাড়াইরত মে‌শিনের ওপর ছিটকে পড়ে এবং যাত্রীবাহী বাস গাছে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ডা. বাসুদেব সাহা, তার স্ত্রী ও সন্তানসহ সাত জন মারা যায়। 

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় হতাহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও কাশিয়ানী হাসপাতালে পাঠায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃত্যু হয়। 

গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গুরুতর আহত কলি খানম, দিদার শরীফ, বদর মিয়া, সোবাহান, বায়েজিদ, আর্জু বেগম, কালাম মিয়া, মাহফুজ, কামরুল, ফারুক, মাসুম মোল্লা, হীরা, হাওয়া বেগম, হোসাইন, আব্দুল রহমান, জোহরা, এসমোতারা, আলিফ, সিফাতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশংকাজনক। 

খবর শুনে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা ও কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসানসহ জেলা ও পু‌লিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল প‌রিদর্শন করেন। এ সড়ক দুর্ঘটনার পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। 

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, মহাসড়কে ধান মাড়াই ও যানবাহনের দ্রুতগতির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

জেলা প্রশাসক জানান, নিহতদের পরিবার প্রতি ১০ হাজার টাকা ও আহতদের প্রত্যেককে চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে। 

মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি। 

আরো পড়ুন: বাস-প্রাইভেটকার-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৭