সারা বাংলা

খুলনা বিভাগে ২৫টি অবৈধ ক্লিনিক সিলগালা 

নিবন্ধন না থাকায় খুলনা বিভাগের ২৫ অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দু’ দিনের অভিযানে উল্লিখিত সংখ্যক প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ ও সীলগালা করা হয়। এর মধ্যে খুলনা জেলায় ৯টিসহ বিভাগের যশোরে ৬টি, মাগুরায় ৭ এবং চুয়াডাঙ্গায় ৩টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে।

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও উপজেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সূত্রগুলো এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আগামীকাল রোববারও (২৯ মে) এ অভিযান চলবে বলে শনিবার (২৮ মে) রাতে নিশ্চিত করেছেন খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ।

খুলনা  খুলনার ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ফুলতলার উপজেলার ১৪টি ক্লিনিক ও ডায়াগষ্টিক সেন্টারের মধ্যে ৯টিই অবৈধ হওয়ায় শনিবার বিকালে বন্ধ ঘোষণা করে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো, ফুলতলা বাজারের জামিরা সড়কের কাজী নুর হোসেনের মালিকাধীন আল-শেফা ডায়াগষ্টিক, ইমরানুল ইসলাম রুমনের সেবা ডায়াগষ্টিক, ডাঃ শফিউদ্দিন মোল্যার করিমুনেচ্ছা প্যাথলজি, শিকিরহাট সড়কের মোঃ ইরসাফিল হোসেনের স্কয়ার ডায়াগষ্টিক, বেজেরডাঙ্গা বাজারের হাসানুজ্জামান মোড়লের মেডি ল্যাব প্যাথলজি, শিরোমনির ডাঃ কামাল হোসেনের দি গ্রেট হাসপাতালের প্যাথলজি বন্ধ এবং তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া নতুনহাট এলাকার নিপুন চন্দ্রের মডার্ণ ডায়াগষ্টিকে সীল করে দেয়া হয়। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জেসমিন আরার নেতৃত্বে অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের আরএমও ডাঃ হাসিবুর রহমান, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর দেলোয়ার হোসেন, থানার এসআই নিরঞ্জন কুমার প্রমুখ।

মাগুরা  শনিবার অবৈধ ও অনিবন্ধিত সাতটি প্রাইভেট ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সেগুলো হচ্ছে- শহরের ভায়না এলাকার রোকেয়া প্রাইভেট হাসপাতাল, একতা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম, নিরাময় প্রাইভেট হাসপাতাল, রিফাত ফার্মেসি, শাহানা মেডিকেল সাভির্সেস, অরো ডেন্টাল কেয়ার, সুখী নীলগঞ্জ প্রজেক্ট। জেলা সিভিল সার্জন শহীদুল্লাহ দেওয়ান এ তথ্য জানিয়েছেন।

যশোর  স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার অনিবন্ধিত ও নিবন্ধনের মেয়াদোত্তীর্ণ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালায় যশোর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ সময় যশোর শহরের পিস হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নূরুল ইসলাম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রোটারি হেলথ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সিএমসি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিবন্ধনের কাগজপত্র পায়নি স্বাস্থ্য বিভাগের টিম। সে কারণে তাদের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ দেয়া হয়েছে।

যশোর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ বলেন, ছয়টি অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা   শহরের হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত ২৫টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সেন্ট্রাল মেডিকেল সেন্টার, সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও চুয়াডাঙ্গা আলট্রাসনোগ্রাফি সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া হালনাগাদ করা কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ইসলামি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও তিসা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সতর্ক করা হয়েছে।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমানের নেতৃত্বে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ অভিযান চলে।এ সময় যেসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি তাদের সিলাগালা ও জরিমানা করা হয়।

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ এ প্রতিবেদককে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে শুক্রবার থেকেই অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথমদিন নড়াইল, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়াতেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর মধ্য নিবন্ধন বিহীন প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করা হয়েছে। অন্যদের ত্রুটি সংশোধনের জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। আগামীকাল রোববার খুলনা শহরে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদদপ্তর বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ৭২ ঘণ্টার (তিন দিন) মধ্যে দেশের অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনেস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনেস্টিক সেন্টার বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও যেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নবায়ন করেনি তাদের নিবন্ধন নাবায়ণ করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। সময়সীমার মধ্যে নবায়ণ না করলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। নিবন্ধন পাওয়ার আগে এসব প্রতিষ্ঠান কোনোভাবে কার্যক্রম চালাতে পারবে না।