সারা বাংলা

পাবনায় বিলবোর্ড লাগিয়ে দোয়া চাইলো ৫ পরীক্ষার্থী

পরীক্ষার আগে বড়দের কাছে দোয়া চাওয়ার রেওয়াজ পুরনো। এটি পারিবারিক, সামাজিক-রীতি। কিন্তু পাবনার কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুলের পাঁচ শিক্ষার্থীর দোয়া চাওয়ার ঘটনায় তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিষয়টিকে কেউ বলছেন ‘সৃজনশীল’, কেউ বলছেন ‘অভিনব’। বলা যায় পুরো ঘটনা এখন ভাইরাল!

এলাকায় বিলবোর্ড লাগিয়ে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার আগে দোয়া চেয়েছে ওই ৫ স্কুলশিক্ষার্থী। তাদের এমন অভিনব কর্মকাণ্ড স্থানীয়দের তো বটেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।  তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, ভাইরাল হওয়ার জন্য নয়, ভাগ্যের কথা ভেবেই সবার কাছে দোয়া চেয়েছে তারা। 

শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে বেড়া উপজেলার কাবাসকান্দা গ্রামের ইফতেখার উদ্দিনের ছেলে সাহেদ, একই গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে অমিত হাসান, নয়াবাড়ি গ্রামের মোহন মোল্লার ছেলে নাহিদ হাসান, দ্বারিয়াপুর গ্রামের খন্দকার শহিদুল্লার ছেলে সামি খন্দকার ও খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছেলে খন্দকার মাশরাফি।

এদিকে বিষয়টি ইতিবাচক ও সৃজনশীলতার দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছে স্কুলের শিক্ষকসহ পরিচালনা পর্ষদ। 

বিজ্ঞান বিভাগের ওই পাঁচ শিক্ষার্থী পরস্পর বন্ধু বলে জানা গেছে। আগামী ১৯ জুন থেকে তাদের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। শিক্ষার্থীদের একজন নাহিদ হাসান জানায়, তাদের কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না। ৪ জুন একটা প্রেসের সামনে দাঁড়িয়ে পাঁচ বন্ধু কথা বলার সময় সেখানে একটি ডিজিটাল বিলবোর্ড দেখে তারা এই পরিকল্পনা করে।  

এ প্রসঙ্গে অমিত হাসানের ভাষ্য- ‘যেহেতু আমরা রাজনীতি করি না, সেহেতু কি উদ্দেশ্যে বিলবোর্ড বানানো যায় সেই চিন্তা করি। তখন আমাদের মাথায় আসে পরীক্ষার কথা। আমরা ভাবি, সবার কাছে দোয়া চেয়ে আমরা একটা বিলবোর্ড বানাতেই পারি।’

ভালো ছাত্র হিসেবে ৫ বন্ধুর সুনাম রয়েছে 

সেই ভাবনা থেকেই ৩টি বিলবোর্ড বানানো হয়। এ জন্য খরচ হয় ১ হাজার টাকা। ৫ জুন কাশিনাথপুর মোড়ে পুলিশ বক্সের পাশে, ফুলবাগান চত্বরে ও বিজ্ঞান স্কুলের সামনে তিনটা বিলাবোর্ড টাঙানো হয়। ‘এরপরই দ্রুত বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে’ উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের একজন সাহেদ জানায়, তারা কেউ ফেসবুকে বিলবোর্ডের ছবি পোস্ট করেনি। তবে ফেসবুকে কেউ একজন বিলবোর্ডের ছবি শেয়ার করলে বিষয়টি ভাইরাল হয়। এরপর অনেক নেতিবাচক মন্তব্য দেখে গত ৭ জুন বিলবোর্ডগুলো নামিয়ে ফেলে তারা। 

তবে বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেও দেখছেন অনেকে। কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্কুলের পাঁচজন ছাত্র অভিনব কায়দায় দোয়া চেয়েছে। ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি আমরা জেনেছি। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা কাজটি করেনি। তারপরও আমরা এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখি। কারণ তারা কোনো অপরাধ করেনি। তারা দোয়া চেয়েছে মাত্র।

স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আমিরুল ইসলাম সানু বলেন, আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ অনভিজ্ঞতার কারণে এ ঘটনায় কিছুটা বিব্রত হয়েছি। তবে তারা অন্যায় কিছু করেনি বলেই আমি মনে করি। এটিকে আমরা সৃজনশীলতার দৃষ্টান্ত হিসেবেই দেখতে চাই।