সারা বাংলা

বাবা-ছেলেকে ছুরিকাঘাত: চিকিৎসাধীন বাবারও মৃত্যু 

নরসিংদীতে মনোহরদী উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিবেশীর ছুরিকাঘাতে রাকিবের (২১) মৃত্যুর ৯ দিন পর মারা গেলেন বাবা সিরাজ উদ্দিন। বুধবার (১৫ জুন) রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকেলে নিহতের লাশ বাড়িতে আনা হলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পরে রাত ৯টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

৬ জুন রাতে ১০টার দিকে মনোহরদী উপজেলার দৌলতপুর পূর্বপাড়া গ্রামে বাবা ও ছেলেকে ছুরিকাঘাত করা হয়। 

এ ঘটনায় সিরাজ উদ্দিনের স্ত্রী রেনুজা বেগম বাদী হয়ে সাইফুল ইসলাম (২২), তার মা নাছিমা বেগম (৪০) এবং খালা তাছলিমা বেগমকে (৩৮) আসামি করে মনোহরদী থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকেই গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, বাদী রেনুজা বেগমের মেয়ে তামান্না (৮) এবং আসামি তাছলিমার মেয়ে নাদিয়া (৭) স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। এ সুবাদে তারা একসঙ্গে যাতায়াত করে। গত ৫ জুন বিকেলে মাদ্রাসা থেকে ফেরার পথে তামান্না খেলার ছলে নাদিয়াকে ছুরতা পাতা (গায়ে লাগালে চুলকানি হয় এমন পাতা) লাগিয়ে দেয়। পরে নাদিয়া বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটি করে বিষয়টি তার মাকে জানায়। এতে তাছলিমা ক্ষিপ্ত হয়ে তামান্নার বাড়িতে গিয়ে গালাগাল করে। পরদিন রাত ১০টার দিকে তাছলিমা, তার বোন নাছিমা এবং ভাগ্নে সাইফুল ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাড়ির অদূরে সিরাজ উদ্দিনের দোকানে এসে পুনরায় গালাগাল করতে থাকেন। তাদের গালাগাল শুনে সিরাজের ছেলে রাকিব ও ভাতিজি পাপিয়া আক্তার ঘটনাস্থলে আসে। পরে দুইপক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সাইফুল উত্তেজিত হয়ে সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে পাপিয়াকে আঘাত করে। পাপিয়াকে রক্ষা করতে সাইফুলের হাত ধরতে যায় রাকিব। এ সময় নাছিমা এবং তাছলিমা রাকিবকে জাপটে ধরলে সাইফুল ছুরি দিয়ে তার বুকে উপর্যুপরি আঘাত করে। রাকিবকে বাঁচাতে তার বাবা এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।

পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পাপিয়াকে সেখানে ভর্তি করেন। রাকিব এবং তার বাবাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নেওয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রাকিব মারা যায়। গুরুতর আহত সিরাজ উদ্দিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন দুই জনের মৃত্যু এবং তিনজনকে গ্রেপ্তারের সত‍্যতা নিশ্চিত করেন।