সারা বাংলা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাড়ছে নদীর পানি, তীব্র ভাঙনের শঙ্কা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওপর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীতে পানি বাড়ায় চরাঞ্চলের আবাদি জমিগুলোতে ভাঙন শুরু হয়েছে। এদিকে পদ্মার পাশাপাশি মাহনন্দা ও পূর্ণভবা নদীতেও বাড়তে শুরু করেছে পানি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীতে দশমিক ৩০ মিলিমিটার, মহানন্দায় দশমিক ২৭ মিলিমিটার, আর পূর্ণভবা নদীতে দশমিক ১০ মিলিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১০-১২ দিন থেকে পদ্মায় পানি বাড়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার দূর্লভপুর ইউনিয়ের মনোহরপুর থেকে নামোজগন্নাথপুর পর্যন্ত নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি। স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত এ ভাঙন রোধ করা না গেলে গত বছরের মতো এবারও পদ্মায় বিলীন হবে বসত ভিটাসহ হাজার হাজার বিঘা জমি। 

মনোহরপুর এলকার বাসিন্দা মুরশালিন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গত বছর আমাদের অনেক ধানিজমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ওইসব জমি থেকে ৭-৮ মাসে চাল উৎপান হতো, গোখাদ্যও হতো। আমার এক প্রতিবেশির ২-৩ বিঘা জমি পদ্মায় বিলীন হয়েছে। এছাড়া আরো অনেকে বাড়ি, ভিটামাটি হারিয়েছে। আমাদের শান্তনা দেওয়ার জন্য জিওব্যাগ দিয়ে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। কিন্তু ১৫-২০ দিনের মাথায় ওই জিওব্যাগগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।’ 

শিমুল নামের এক যুবক বলেন, ‘মনোহরপুর থেকে জগন্নাথপুর পর্যন্ত ভাঙন ধরেছে। পাড়গুলো বেলেমাটির হওয়ায় নিমিষেই পানির স্রোতের ধাক্কায় তা নদীতে নেমে যাচ্ছে গতবছরও অনেক মানুষ নদীর তীর থেকে বাড়ি ঘর সরিয়ে নিয়েছিলেন। আবার অনেকের ভিটামাটি, ধানিজমি, আম বাগান নদীতে বিলীন হয়েছে। দ্রুত ভাঙন না রুখলে জনবসতিও বিলিন হয়ে যাবে।’

দূর্লভপুরের মনোহরপুর এলাকার গ্রাম পুলিশের সদস্য শাহিন বলেন, গত বছরের ন্যায় এবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীতে পানি বাড়লে কিংবা কমলে ভাঙন ধরে। 

দূর্লভপুর ইউনিয়নের দফাদার মতিউর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছরই পদ্মায় ভাঙন দেখা দেয়। স্থায়ী বাঁধের বদলে জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙনরোধ করা সম্ভব না।’

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন বলেন, ‘পদ্মায় বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ২২ দশমিক ৫০ মিলিমিটার, বর্তমানে পানি আছে ১৪ দশমিক ৬৮ মিলিমিটার। মহানন্দায় বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ২১ মিলিমিটার, সেখানে ১৫ দশমিক ০১ মিলিমিটার পানি আছে। পূর্ণভবায় ২২ মি.মি বিপৎসীমা ধরা হয়েছে। তবে বর্তমানে ওই নদীতে পানি আছে ১৫ দশমিক ৯৭ মিলিমিটার।’ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘পদ্মাপাড়ে ১০কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জায়গায় ভাঙন শুরু হয়েছে। ওইসব ভাঙন কবলিত এলাকায় কাজ শুরু করার অনুমতি পাইনি আমরা। অনুমতি পেলে আমরা ভাঙন রোধে কাজ শুরু করবো।’