সারা বাংলা

পদ্মা সেতু: চলবে বিলাসবহুল বাস, কমবে ঢাকা-খুলনা ভাড়া

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করেছে পদ্মা সেতু। তৈরি হয়েছে সেতুবন্ধ। এ কারণে খুলনা থেকে মাওয়া পাড়ি দিয়ে ঢাকায় যেতে গণপরিবহনের সংখ্যা এতদিন সীমিত থাকলেও এখন তা বাড়ানো হচ্ছে। পদ্মা সেতু পার হয়ে এখন খুলনা-মাওয়া-ঢাকা রূটে যুক্ত হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন নামে বিলাসবহুল বাস।

ইতোমধ্য ‘ইলিশ’ ও ‘প্রচেষ্টা’সহ বেশ কিছু নতুন পরিবহনের নাম শোনা গেছে। সেতু উদ্বোধনের পর থেকে চলাচল শুরু করবে এ সব পরিবহন। 

পরিবহনগুলো খুলনা-ঢাকার ভাড়া এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে গ্রীনলাইন খুলনা থেকে ঢাকা যাওয়ার ভাড়া ঘোষণা করেছে। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পরের দিন আগামী ২৬ জুন থেকে ওই পরিবহন এ ভাড়া কার্যকর করবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর পিলারে আঘাতের পর থেকে নদীতে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে হানিফ, ঈগল ও সোহাগ পরিবহনের গাড়ি মাওয়া দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। গ্রীনলাইন, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, বনফুল ও ইমাদসহ কয়েকটি পরিবহন লঞ্চ পারাপারে যাত্রী বহন করে থাকে। এ রুটে নন এসি থেকে এসি বাসে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে ভাড়া কিছুটা কমতে পারে বলে পরিবহন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গ্রীন লাইন পরিবহন খুলনার ম্যানেজার মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, বর্তমানে ইকোনোমি শ্রেণির ৪টি গাড়ি এ রুটে চলাচল করে। ভাড়া প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ১০০০ টাকা নেওয়া হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে ভাড়া কমে যাবে। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করে বলেন, লঞ্চভাড়া বাবদ তাদের ৪ হাজার টাকা গুনতে হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে সেই টাকা আর তাদের খরচ হবে না। সরকার গাড়ির টোল নির্ধারণ করেছেন ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা। সেক্ষেত্রে তারা ইকোনোমি শ্রেণিতে ভাড়া ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করেছেন। 

তিনি আরও বলেন, সেতু চালু হলে ডাবল ডেকার ও বিজনেস ক্লাসের মতো গাড়ি খুলনায় চলাচল করবে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি সিটের ভাড়া ১২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ গাড়িগুলো আগামী ২৩ জুনের মধ্যে খুলনা নগরীতে প্রবেশ করবে।

সোহাগ পরিবহনের ইনচার্জ মো. ইয়ামিন বলেন, লঞ্চ পারাপারে তাদের কোনো গাড়ি নেই। খুলনা থেকে গোপালগঞ্জ,  ভাঙা দিয়ে আরিচা পার হয়ে তাদের গাড়ি ঢাকায় যায়। পদ্মা সেতু চালু হলে তারাও সেতুর রুট ব্যবহার করবে। ভাড়ার বিষয়ে এখনও কোম্পানি সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে সেতু চালু হলে তারা যাত্রীদের মতামত নিয়ে একসপ্তাহ এ রুটে গাড়ি চালাবেন। যাত্রীরা যদি এ পথ ব্যবহার করতে চান, তাহলে তারা সেতু ব্যবহার করবেন। পরবর্তীতে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। এ পরিবহন কোম্পানিও আধুনিক ও উন্নত মানের গাড়ি সংযোজন করবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

হানিফ পরিবহনের ম্যানেজার মো. শাওন বলেন, ভাড়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখনও সিদ্ধান্ত দেয়নি। তবে আরিচা রোডের থেকে এ রুটের ভাড়া কম হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের জি এম গোলাম ছামদানি বলেন, ইতোমধ্যে তাদের ১০টি আধুনিক গাড়ি খুলনায় চলে এসেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে এ গাড়িগুলো আগামী ২৬ জুন সকালে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। ভাড়ার বিষয়ে কোম্পানি কিছু জানায়নি। 

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে তাদের পরিবহনে খুলনা-ঢাকা নন এসি ৬০০ টাকা, এসি ৭০০ টাকা ও বিজনেস শ্রেণিতে ৯০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়।