সারা বাংলা

পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খোলা মাহাদী কারাগারে

পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খুলে ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় মাহাদী হাসানের (২৫) বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় তাকে আদালতে তোলা হয়। 

বুধবার (২৯ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে পদ্মা সেতু (উত্তর) থানায় মামলা করেন পুলিশের এসআই নজরুল ইসলাম।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মাহাদীকে মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মানিক চন্দ্র দাশের আদালতে তুললে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

এ মামলার বাদী এসআই নজরুল ইসলাম বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে বলেও নানা তিনি। 

এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাতে মাহাদীকে লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গ্রেপ্তারের পর তাকে পদ্মা সেতু (উত্তর) থানায় হস্তান্তর করা হয়।

মাহাদী ফেসবুকে ‘পদ্মা সেতুর নাট খুইল্লা গেছে’ মন্তব্য করে ভিডিও পোস্ট ও শেয়ার করার পর তা ভাইরাল হয়। পরে মাহাদী বাড়িতে না এসে পালিয়ে বেড়ায়। মাহাদী মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার ধীপুর ইউনিয়নের রব নগরকান্দী গ্রামের মনির কাজীর বড় ছেলে। মনির কাজীর পৈত্রিক বাড়ি একই উপজেলার হাসাইলে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সরেজমিন ধীপুর গ্রামে মাহাদীর বাড়ি গিয়ে এলাকাবাসী ও ধীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইদ যুবরাজের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ২৭ জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাহাদীর বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

মাহাদী কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কি-না তা জানা নেই বলে জানান সাইদ যুবরাজ।  

গত ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। পর দিন ২৬ জুন ভোর থেকে এ সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। দুপুরে ৩৪ সেকেন্ডের টিকটক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, বায়েজিদ তালহা সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বল্টুর নাট খুলছেন। ভিডিও ধারণকারীকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দেহ।’ নাট হাতে নিয়ে বায়েজিদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু, আমাদের... পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’

বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পরপরই ওইদিন বিকেলে বায়েজিদকে রাজধানীর শান্তিনগর থেকে সিআইডি পুলিশের সদস্যরা গ্রেপ্তার করে। পরে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। সেই মামলায় আদালতের মাধ্যমে বায়েজিদকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।