সারা বাংলা

উৎপলকে ছাড়াই পাঠদান শুরু

ঢাকার সাভারে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যাকাণ্ডের আজ সপ্তম দিন। দশ বছর ধরে যে প্রতিষ্ঠানে পাঠদান করেছেন, সেই প্রিয় অঙ্গনেই বখাটে এক শিক্ষার্থী কেড়ে নিয়েছে তার প্রাণ। উৎপল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ দিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর আজ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে। তবে উৎপলকে ছাড়া পাঠদানে মনোযোগী হতে পারছেন না তার সহকর্মী শিক্ষকরা। বার বার উৎপলের স্মৃতি তাদের নাড়া দিচ্ছে। কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে তাদের।

শনিবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে গতকালের ঘোষণা অনুযায়ী হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঠদান শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। এরপর সকাল ১১টা থেকে শুরু হয় হাইস্কুল ও কলেজ শাখার পাঠদান।

নিহত উৎপল কুমারের খুব কাছের সহকর্মী হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ওনার অনুপস্থিতিটা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছি না। খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি যখন এখানে জয়েন করি, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তখন ওনি দুই বছরের সিনিয়র আমার। কিন্তু আমরা দুজন ২০০২ সালে এসএসসি পাশ করেছি। এখানে আসার পর একসাথে রুম শেয়ার করেছি। কিন্তু উৎপল স্যারের অনুপস্থিতিতেই আমাদের ক্লাস শুরু করতে হচ্ছে। কারণ বাচ্চাদের কথাটাও চিন্তা করতে হবে। ওদের ভবিষ্যৎ কোনওভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি উৎপল স্যারের খুনিও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে।’

হাজী ইউনুছ আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, ‘গতকালের ঘোষণার পর আজ থেকে পাঠদান শুরু করেছি আমরা। মর্নিং শিফটে ২০-৩০ শতাংশ উপস্থিতি আছে। এগারোটার পর হাইস্কুল ও কলেজের পাঠদান শুরু হয়েছে। আগামীকাল থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠানেও ঈদের ছুটি দেওয়া হবে। ১৬ জুলাই পর্যন্ত এই ছুটি কার্যকর হবে। আসলে অনেকের মাঝে থেকে এখনও আতঙ্ক কাটেনি। তারওপর ঈদ চলে আসায় অনেক শিক্ষার্থী ঢাকার বাইরে গ্রামের বাড়ি চলে গেছে।’

উল্লেখ্য, গত শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে মেয়েদের ক্রিকেট খেলার সময় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। পরদিন সাভারের এনাম মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। একই দিন নিহতের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বুধবার অভিযুক্ত ছাত্র জিতু ও বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বর্তমানে আসামিরা আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে ৫ দিন করে রিমান্ডে আছেন।