সারা বাংলা

বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে লাফ, ভাইবোনের মরদেহ উদ্ধার

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফেরার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ধাওয়ায় নদীতে ডুবে নিখোঁজ দুই ভাইবোনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (৩ জুলাই) দুপুরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে বিএসএফ সদস্যরা। মৃতরা হলো- পারভিন (৮) ও সাকিবুর (৬)। তাদের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার পশ্চিম শুকাতী গ্রামে। দুই শিশুর বাবার নাম রহিজ উদ্দিন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৬ বছর আগে রহিজ উদ্দিন ও তার স্ত্রী সামিনা খাতুন ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের সুলতানপুরে ইটভাটায় কাজ করতে যান। সেখানেই তাদের দুই সন্তানের জন্ম হয়। বাবা-মা বাংলাদেশি হলেও শিশুদের জন্ম ভারতে হওয়ায় তাদের বাংলাদেশের নাগরিকত্বের কোনো প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি। এ জন্য বিজিবির কাছে শিশুদের মরদেহ হস্তান্তর করেনি বিএসএফ।

নিহত শিশুদের বাবা রহিজ উদ্দিন বলেন, ‘ভারত থেকে পরিবার নিয়ে দেশে ফেরার জন্য দালালদের ৬২ হাজার রুপি দিয়েছি। শুক্রবার (১ জুলাই) রাতে তারা আমাদের সীমান্তের কোনো এক বাড়িতে রাখে। সেখানে আরো ২০ থেকে ২৫ জন নারী, পুরুষ ও শিশু ছিল। পরে আমাদের নদীর পাড়ে নিয়ে আসা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘এসময় লোকজনের কথার শব্দ শুনে বিএসএফ সদস্যরা লাইট জ্বালিয়ে ধাওয়া দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে আমার স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে সন্তানরা মায়ের হাত থেকে ফসকে যায়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ দুই শিশুর মরদেহ ভেসে উঠেছে।’

লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি কাশিপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার কবির হোসেন দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে কোনো কাগজ দেখাতে না পারায় দুই শিশুর মরদেহ বিএসএফ নিয়ে গেছে। এ নিয়ে দুই দেশের কোম্পানি পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।’