সারা বাংলা

চৌগাছায় প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে পুলিশ সদস্যের বাল্যবিয়ে

যশোরে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিষেধ অগ্রাহ্য করে স্কুলপড়ুয়া নাবালিকাকে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে আসাদুজ্জামান পিকুল নামে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত। 

প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে পুলিশ সদস্যের বাল্যবিয়ের ঘটনায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন গত ২৮ ও ২৯ জুলাই উপজেলায় অন্য একটি বাল্যবিয়ের ঘটনায় যেখানে কনের বাবা, দাদা, নানা ও বরের মামাসহ চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে সেখানে একজন পুলিশ সদস্য কেন একই অপরাধ করে আইনের মাধ্যমে শাস্তি পাবেন না?

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৬ আগস্ট উপজেলার সলুয়া গ্রামের তাইজুল ইসলামের স্কুলপড়ুয়া মেয়ে সাদিয়া খাতুনের (১৬) সঙ্গে বিয়ের দিন নির্ধারিত ছিল আসাদুজ্জামান পিকুলের (২৮)। বিষয়টি জানতে পেরে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা নিজে পিকুলকে বাল্যবিয়ে করতে নিষেধ করেন। পরে চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ, জগদীশপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামও পিকুলের সঙ্গে কথা বলে তাকে বাল্যবিয়ে না করার নির্দেশ দেন। এ সময় পিকুল বাল্যবিয়ে করবেন না মর্মে অঙ্গীকার করেন।

কিন্তু পিকুল গত ১৪ আগস্ট যশোর নোটারী পাবলিক-এর কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিবাহ সংক্রান্ত ঘোষণা দেন। ঘোষণাপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, যশোর সদর কাজী অফিসের মাধ্যমে উল্লেখিত সাদিয়া আক্তারকে তিনি এক লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেছেন। এফিডেভিটে সাদিয়া আক্তারের জন্ম তারিখ ২০০৪ সালের ১৯ মে দেখানো হয়েছে। 

এদিকে ফুলসারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ইস্যু করা সাদিয়া আক্তারের জন্মনিবন্ধনপত্রে তার জন্ম তারিখ ২০০৬ সালের ১৯ মে। এ ছাড়াও কাজী অফিসে বিয়ে রেজিস্ট্রির পর পিকুল আবার কেন নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে এফিডেভিট করলেন এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জর্জ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সাগর বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের বিবাহ সংক্রান্ত কোনো আইনে এ কথা বলা হয়নি যে- কাজী অফিসে বিবাহ রেজিস্ট্রি করার পর আবার নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে এফিডেভিট করতে হবে। এ কাজ করার অর্থ হলো এখানে আইনের কোনো ব্যাত্যয় ঘটানো হয়েছে।’

চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি নিজে ওই পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বাল্যবিয়ে করবেন না বলে আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শুনেছি তার বড় ভাইও এক নাবালিকাকে বিয়ে করেছেন। ডিসি স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক এ বিষয়ে চৌগাছা থানায় নিয়মিত মামলা করা হবে। একইসঙ্গে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পত্র দেয়া হবে।’