সারা বাংলা

মেহেদীর মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা, মিলছে না অনেক প্রশ্নের উত্তর 

খুলনায় জিএম ইমদাদুল ইসলাম মেহেদী (৪২) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। গত ১১ আগস্ট মহানগরীর জোড়া গেট রেল ক্রসিং সংলগ্ন রেল লাইন থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।  

মেহেদী ঋণের বোঝা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেলেও তার পরিবার এই মৃত্যুকে অস্বাভাবিক বলছেন। এ ছাড়া জনবহুল এলাকায় দিনের আলোয় কীভাবে তিনি চলন্ত রেলগাড়ির নিচে ঝাঁপ দিলেন এ নিয়েও পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

এদিকে, মেহেদীর মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া চিরকুট থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সেখানে মহানগরীর হকার্স মার্কেটের দুজন ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ রয়েছে। এই মার্কেটেই মেহেদী কাপড়ের ব্যবসা পরিচালনা করতেন। 

মেহেদী মহানগরীর বানরগাতী এলাকার মৃত নজরুল ইসলাম গোলদারের ছেলে। নাবিয়া সামিন মানহা ও সিদরাতুল মুনতাহা নামে তার দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত নিহতের বড় ভাই ইমরুল ইসলাম মুকুল এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘তাদের পারিবারিক কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গেও তার কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। তবে ব্যবসায়িকভাবে বা অন্য কোনো কারণে তার সঙ্গে কারো দ্বন্দ্ব বা বিরোধ ছিল কিনা জানা নেই। ফলে তার আত্মহত্যার কারণ আমরা বুঝতে পারছি না।’

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে মেহেদী গত ১১ আগস্ট বেলা ১২টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসা থেকে তার বড় মেয়ে মানহাকে এনে বাসায় রেখে দোকানে যান। সেখান থেকে যোহরের নামাজ আদায় করে একটি ছাতা নিয়ে বের হন। এরপর আর বাসায় ফিরে আসেননি।  

এদিকে মেহেদীর মামা নাজমুল হক বলেন, ‘মেহেদীর মৃতদেহের পাশ থেকে যে চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে হকার্স মার্কেটের দুজন ব্যবসায়ী সেবা ও মাসুমের নাম লেখা ছিল। সেখানে উল্লেখ ছিল- সেবার কারণে তিনি মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছেন। এমনকি তার কারণে মার্কেটের আরো অনেক ব্যবসায়ী মারা যাবে বলেও চিরকুটে উল্লেখ রয়েছে।’

চিরকুটটি আলামত হিসেবে রেলওয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে জানান নাজমুল হক। তারা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারেও চিন্তা করছেন বলে জানান।   খুলনা রেলওয়ে জিআরপি থানার এসআই মো. ইদ্রিস বলেন, মেহেদী নিহতের ঘটনায় রেলের কর্তব্যরত মাস্টার বাদি হয়ে জিআরপি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। তদন্ত হলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।