সারা বাংলা

খেলার নাম ‘গদি কাদা’

গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী একটি খেলার নাম ‘গদি কাদা। সমবয়সী দুইজন প্রতিযোগী মাটিতে হাঁটুগেড়ে বসে উভয় উভয়ের কাঁধের নিচে মাথা গুঁজে ও পা চেপে ধরে শক্তি প্রয়োগ করেন। যে প্রতিযোগী শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নিজের শরির ছাড়িয়ে নিতে পারেন তাকেই  বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। 

ব্যতিক্রমী এই খেলার নামই ‘গদি কাদা।’ কয়েকজন প্রতিযোগী বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে এক অন্যের মুখোমুখি হন। প্রতিটি খেলায় বিজয়ী অপর খেলায় জয়ীর সঙ্গে পরের ম্যাচে মুখোমুখি হন। এভাবে চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে একজনকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।

গদি কাদা খেলাটির আয়োজন করে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে গ্রামের ধনেশ বাবুর বাড়ির উঠানে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়। 

গদি খেলার পাশাপাশি আয়োজকরা গ্রামের অন্যদের জন্য পিচ্ছিল কলাগাছ বেয়ে ওঠা, হাড়িভাঙা এবং নারকেল কাড়াকাড়ি খেলার আয়োজন করেন।  এসব খেলা দেখতে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সী কয়েক শ মানুষ।

প্রথমে দু’জন সমবয়সী কাদা খেলায় নামেন। শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি কৌশল ব্যবহার করে যিনি নিজেকে সবার প্রথমে ছাড়িয়ে নিতে পারেন সেই হন বিজয়ী। ‘গদি কাদা’ খেলা শেষ হওয়ার পর শুরু হয় পিচ্ছিল কলা গাছ বেয়ে ওঠা প্রতিযোগিতা। এই খেলায় সফল হওয়া বেশ কঠিন। এরপর চলে হাড়িভাঙা ও দল বেঁধে কাদা মাটির মধ্যে নারকেল কাড়াকাড়ির খেলা। 

খেলা দেখতে আসা জাকির হোসেন বলেন, ‘আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম-বাংলার অনেক ঐতিহ্যবাহী খেলা এখন বিলীন প্রায়। অনেক আগে এই খেলাটি (গদি কাদা) দেখেছিলাম, আজকে আবার দেখলাম। ভালো লেগেছে, উপভোগ করেছি।’

আয়োজক জ্যোতিষ চন্দ্র রায় বলেন, ‘এটা আমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব জন্মাষ্টমী উপলক্ষে প্রতি বছরের ২০ আগস্ট আমরা  খেলার আয়োজন করি। সবাই আনন্দে মেতে উঠি।’

আয়োজক শ্যামল সেন বলেন, ‘জন্মাষ্টমী উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা  ‘গদি কাদা’ খেলার আয়োজন করেছি। সামনের বছর আরো বড় পরিসরে খেলার আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’