সারা বাংলা

অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধন ৪ সেপ্টেম্বর

পিরোজপুরের কঁচা নদীর উপর নির্মিত অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু আগামী ৪ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন সকাল সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের আরো একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। 

পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. জাহেদুর রহমান জানান, আগামী ৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধনের সম্মতি জানিয়েছেন। সেতুটি উদ্বোধনের পরপরই তা যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। 

কাউখালীর বেকুটিয়া ও পিরোজপুরের কুমিরমারা পয়েন্টে কঁচা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয় অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। এই সেতুর নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেতু নির্মাণ প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান সুমন।

গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি চালু হলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে খুলনা হয়ে বরিশাল, কুয়াকাটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার স্বপ্নের দুয়ার খুলে যাবে। এর ফলে গতি আসবে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে।

বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেতু দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের দুই বিভাগকে এক করে দিয়েছে। সেতুটি চালু হলে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দর এবং বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরকে সরাসরি সড়ক পথে সংযুক্ত করা যাবে। যার ফলে সড়ক পথে এ দুই অঞ্চলের ১৬টি জেলার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ও যাতায়াতের সুযোগ তৈরি হবে।

পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে  জানা গেছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। ৯টি স্প্যান ও ১০টি পিলার বিশিষ্ট ৯৯৮ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৩ দশমিক ৪০ মিটার প্রস্থের সেতুটির নির্মাণে ব্যায় ধরা হয়েছিল প্রায় ৮৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৫৪ কোটি চীন এবং ২৪৪ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার যোগান দিয়েছেন। ৪২৯ মিটার ভায়াডাক্টসহ ডাবল লেনের সৈতুটির দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪২৭ মিটার এবং প্রস্থ ১০ দশমিক ২৫ মিটার। সেতুটি জেলার কাউখালী উপজেলার বেকুটিয়া অংশ ও পিরোজপুর সদর উপজেলার কুমিরমারা অংশকে যুক্ত করেছে।  

জানা গেছে, ২০০০ সালে পিরোজপুর সরকারি বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঁচা নদীর বেকুটিয়া  অংশে অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুটি  স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। 

সেতুটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মাসুদুর রহমান সুমন জানান, ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেকুটিয়া পয়েন্টে এ সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ওই বছর ‘চায়না রেলওয়ে ১৭তম ব্যুরো গ্রæপ কোম্পানি লিমিটেড’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আওতায়  ‘চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ রিকোনিসেন্স ডিজাউন ইনস্টিটিউট’ সেতুটি নির্মাণ করে। 

গত ৭ আগস্ট চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর উপস্থিতিতে ঢাকায় চীনের দূতাবাসের ইকনোমি মিনিস্টার বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের সচিবের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি হস্তান্তরের দলিলে সই করেন।  

পিরোজপুর জেলা উদীচী’র সাধারণ সম্পাদক মো. খালিদ আবু জানান, সেতুটি খুলে দিলে পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের    ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা খুঁজে পাবেন। পাশাপাশি বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা জেলার সঙ্গে যশোর ও খুলনার দূরত্ব এক ঘণ্টারও বেশি কমে যাবে। আর পিরোজপুর হবে এক সম্ভাবনাময় জেলা।