সারা বাংলা

ভালো ফলনেও আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা

ফলন ভালো পেলেও ভোলার লালমোহনে আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। যার মূল কারণ মনে করা হচ্ছে; অধিক পরিশ্রম ও ফসল পেতে অতিরিক্ত সময় অপেক্ষা করাকে। কৃষকদের দাবি, সরকার যদি সরাসরি কৃষক থেকে আখ কেনার উদ্যোগ নিতেন, তাহলে কৃষকরা লাভবান হতেন। এতে আখ চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়তে পারে কৃষকদের।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, গত বছর উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হলেও এ বছর আখ চাষ হয়েছে ৩৫ হেক্টরে। যার চাষাবাদ গত বছরের তুলনায় কমেছে প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে।

উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পাঙ্গাশিয়া গ্রামের আখ চাষী জেবল হক সর্দার বলেন, ‘বিগত ৪০ বছর ধরে আখ চাষ করছি। অন্যান্য ফসলের চেয়ে আখ চাষে পরিশ্রম অনেক বেশি। আবার আখের ক্ষেতে কাজ করার লোকও ঠিকমত পাওয়া যায় না। অন্যদিকে এসব আখের ন্যায্যমূল্য পেতে নিজেদের বাজারে গিয়ে কষ্ট করে বিক্রি করতে হয়। আর বেপারীরা/ পাইকারীরা ক্ষেতে কিনতে আসলে দাম কম বলে। যাতে করে খরচের তুলনায় তেমন লাভবান হওয়া যায় না। তাই গত বছর প্রায় ৬০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করলেও এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি। সরকার যদি সরাসরি আমাদের কাছ থেকে আখ কেনার উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে আখের সঠিক মূল্য পাওয়া যেত।’

লালমোহন ইউনিয়নের ফুলবাগিচা গ্রামের চাষি মো. জুয়েল বলেন, ‘আমাদের পূর্ব পুরুষরাও আখ চাষ করেছেন। আমিও গত ৬-৭ বছর ধরে চাষ করছি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় আখ চাষে পরিশ্রম অনেক বেশি হওয়ায় গত বছর ১৬ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করলেও এ বছর ৮ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছি। এতে যা ফলন হয়েছে তাতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব হবে।’

এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আহসান উল্যাহ বলেন, আখ চাষে যে সময় লাগে, সে সময়ে কৃষকরা অন্যান্য ফসল উৎপাদন করে আখের চেয়েও ভালো লাভবান হতে পারে। যার জন্য কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে। এছাড়াও সরকারিভাবে অন্যান্য ফসলের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হলেও আখের জন্য কোনো প্রণোদনা দেওয়া হয় না। মূলত এসব কারণেই উপজেলাতে আখ চাষ কমে যাচ্ছে।