কুমিল্লা নগরীর ব্যস্ততম এলাকা শাসনগাছা যানজট মুক্ত রাখতে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলেও সেই ফ্লাইওভার নগরবাসীর যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শাসনগাছা বাস টার্মিনাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও ট্রাফিক পুলিশ স্বল্পতাসহ নানা কারণে ফ্লাইওভারের সুফল পাচ্ছেন না নগরবাসী।
যানজটে নাকাল শাসনগাছা এবং এর আশেপাশের এলাকা। এর বিরুপ প্রভাব পড়ে নগরজুড়ে। ফ্লাইওভারে উঠতে-নামতে এমনকি ফ্লাইওভারের উপরেও প্রায়ই যানজট দেখা যায়। অনেক সময় যানজট পুলিশ লাইন এবং ঝাউতলা পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। তখন ওই পথে যাতায়াতকারীদের দুর্দশার সীমা থাকে না।
শাসনগাছা রেলক্রসিংয়ের কারণে বারবার রেল গেইট আটকে থাকার কারণে ওই এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দিত। পরিত্রাণ পেতে ২০১৩ সালের জুলাই মাসে ৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৩১ দশমিক ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনজীবন বিপর্যস্তের কথা চিন্তা করে ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হলেও শাসনগাছা বাস টার্মিনাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা কারণে সেই সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ফ্লাইওভারের মুখে ও নিচে বিভিন্ন স্থানে বাস, অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানো হয়। ফ্লাইওভারের প্রবেশমুখের সড়কও বেহালদশা। রাত ১২টার পর অনেক সময় ফ্লাইওভারের সড়ক বাতিগুলো নিভে যায়। পপিয়া পরিবহনের চালক আব্দুল খালেক মোল্লা বলেন, শাসনগাছা পার হতে আমাদের ৪০ মিনিট থেকে কখনো ১ ঘণ্টা লেগে যায়। এখানে কেউ কারো কথা শোনে না। আমরা চালকরা একদিকে যাত্রীদের বকা শুনি, অন্যদিকে লাঠির গুতা খাই ট্রাফিক পুলিশের।
সুগন্ধা পরিবহনের চালক নাম প্রকাশ না করে বলেন, এখানে আরো তিনটা ফ্লাইওভার করলেও কাজ হবে না। এই বাস টার্মিনালের যারা কর্তা ব্যক্তি তাদের সদিচ্ছা থাকতে হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একই কথা বলেছেন কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক নেতা। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী বাস টার্মিনালকে কেন্দ্র করে অনেক রাজনীতি আছে, টাকার খেলা আছে। সুতরাং এখানে শৃঙ্খলা আনতে হলে প্রশাসনের কঠোরতার পাশাপাশি রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকাও জরুরি।
কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রাজন কুমার দাস বলেন, শাসনগাছায় আমাদের ৩ জন ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত থাকে। যেহেতু সেখানে একটা বাস টার্মিনাল রয়েছে, গাড়িগুলো বিশৃঙ্খলা করে।
এ দিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী ড. সফিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি সড়ক বিভাগের দায়িত্ব। আমাদের অংশটুকু আমরা সব সময় যানজট মুক্ত রাখার চেষ্টা করি।
শাসনগাছা ফ্লাইওভারের নিচের সড়কে প্রায় ১৩ কোটি টাকার কাজ চলমান। এ কারণে কিছু সমস্যা থাকতে পারে। ফ্লাইওভারের লাইট বন্ধ থাকার বিষয়ে আপনাদের মাধ্যমেই শুনছি। বলেন কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা।