সারা বাংলা

নিজ শিশুকে পুকুরে ফেলে হত্যা করলেন বাবা 

বগুড়ার শেরপুরে নিজের ১৪ মাস বয়সী কন্যা শিশু হুমায়রা খাতুনকে ঘুম থেকে তুলে পুকুরে ফেলে হত্যা করেছে জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় লাশ উদ্ধারের পর ঘাতক বাবাকে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। 

মারা যাওয়া হুমায়রার পরিবার জানায়, মেয়েকে পুকুরে দিলে ধনসম্পদ পাওয়া যাবে এমন স্বপ্ন দেখে জাকির এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। 

তবে পুলিশের দাবি, পরপর কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় এই হত্যাকাণ্ডে ঘটিয়েছেন জাকির।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের উঁচুলবাড়িয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। 

জাকির হোসেন ওই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাত বছর আগে জাকিরের সঙ্গে নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়। এক বছরের মাথায় এই দম্পতির সংসারে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। এরপর জাকিরের প্রত্যাশা ছিল ছেলে সন্তানের। কিন্তু দ্বিতীয় সন্তানও মেয়ে হয়।

মারা যাওয়া হুমায়রার দাদি সালেহা বিবি বলেন, ‘পরিবারের অনেকেই মাঝে মধ্যে স্বপ্নে দেখতেন তাদের পরিবারের কোনো শিশু পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে জাকিরের সঙ্গেও কথা হয়। এরপর আমরা পুকুরে একাধিকবার দুধ ঢেলেছি ও চাল দিয়েছি। এরপরেও আমাদের সঙ্গে এরকম ঘটনা ঘটলো।’

হুমায়রার মা রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘মধ্যরাতে ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার মেয়ে খাটের ওপর নেই। মেয়ের বাবাকে ফোন দেই। পরে পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে বিষয়টি জানাই। এরপর সবাই এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে সকালে স্বামী মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে পুকুরে লাশের সন্ধান দেয়।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘আমার স্বামী মাঝে মধ্যে স্বপ্ন দেখতেন। স্বপ্নে তিনি গুপ্ত সম্পদ দেখতে পেতেন।’ 

বগুড়া শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, ‘পরপর দুটি কন্যা সন্তান হওয়ায় জাকির অসন্তুষ্ট ছিলেন। এ কারণে তিনি তার ছোট মেয়েকে ঘুমন্ত অবস্থায় উঠিয়ে পঁচা ডোবায় ফেলে হত্যা করেছেন। এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে জাকিরকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়েছে। লাশ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের পাঠানো হয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আসামিকে আদালতে প্রেরণ করে রিমাণ্ডের আবেদন করবো।’