সারা বাংলা

যাত্রীছাউনিতে থাকা সেই শিক্ষকের দায়িত্ব নিলেন ইউএনও

বগুড়ার সেই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং রাজনীতিক আব্দুর রশিদের দায়িত্ব নিয়েছেন নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিফা নুসরাত। 

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আব্দুর রশিদকে কুন্দারহাট যাত্রীছাউনি থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। শিক্ষক আব্দুর রশিদ গত ৮/৯ মাস ধরে ওই যাত্রীছাউনিতে বসবাস করছিলেন। 

আব্দুর রশিদকে নিয়ে সম্প্রতি রাইজিংবিডিতে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়া একাধিক সংবাদ মাধ্যমও খবর প্রকাশ করে। এর পরই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

শিক্ষক আব্দুর রশিদকে উদ্ধারের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিফা নুসরাতের সঙ্গে নন্দীগ্রাম পৌর মেয়র আনিসুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা ও ভাটগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ (৮৮) বিভিন্ন সময়ে তিন তিনটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরশাদ সরকারের সময় ছিলেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি। দুইবার উপজেলা পরিষদে নির্বাচন করেছিলেন এরশাদ সরকারের আমলে। বাড়ি, পুকুর চাতাল, বাগানসহ চাষাবাদের জমিও ছিল তার। তবে সময়ের ব্যবধানে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব আব্দুর রশিদ। স্ত্রী-কন্যার কাছ থেকে বিতাড়িত হয়ে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফেরেন তিনি। এরপর পরিস্থিতির শিকার হয়ে ৮/৯ মাস ধরে কুন্দারহাট বাসস্ট্যান্ড যাত্রীছাউনিতে বসবাস করছিলেন এই শিক্ষক।

আব্দুর রশিদকে যাত্রীছাউনি থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল হোসেন ও আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ইকবাল মাহমুদ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এরপর চিকিৎসকরা জানান, শিক্ষকের ফুসফুসে পানি জমেছে। এছাড়া তাঁর কোমরের হাড় ভাঙা, মানসিক সমস্যা, পানিশূন্যতা ও চর্মরোগও আছে। এসব কারণে তাঁর বেশকিছু পরীক্ষা করানো দরকার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিফা নুসরাত বলেন, ‘শিক্ষকের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে থাকার জন্যও ঘরের ব্যবস্থা করা হবে। ভালো কোনো বৃদ্ধ নিবাসে যেন তাঁকে রাখা যায় সবার কাছে সেই সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’