সারা বাংলা

নরসিংদীর ১০০ বটবৃক্ষের ভূতুড়ে বাগান

অনেকটা ভূতুড়ে, অনেকটা আকষর্ণীয়। জায়গার নাম ১০০ বটতলা। শত বছর ধরে মাটির বুকে দাঁড়িয়ে আছে কিছু বটবৃক্ষ। বিশাল জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বটগাছগুলো এখন ইতিহাসের সাক্ষী এবং দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই অনেক কৌতুহলী মানুষ ভিড় করছে এখানে।

নরসিংদী সদর উপজেলার পাচঁদোনা ইউনিয়নের শৈকাদী গ্রাম। ছোট এই গ্রামটি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে প্রাচীনতম কিছু বটবৃক্ষের কারণে। অদ্ভুদ ভাবে একত্রিত হয়ে প্রাচীন কাল থেকে এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে গাছগুলো। এখানকার পরিবেশ কিছুটা ভূতুড়ে হলেও, গাছগুলো অনেক পর্যটকের কাছে দারুণ আকর্ষণীয়।

এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মিয়া ও ইমন শিকদার বলেন, ‘বিশাল জায়গাজুড়ে রয়েছে প্রায় ১০০টির মতো বাটগাছ। বটগাছগুলো শুধু ইতিহাসের সাক্ষী নয়, দর্শনীয় আশ্চর্যের উপাদান বলা চলে। আমরা ছোটবেলা থেকে গাছগুলোকে দেখছি। এই গাছগুলো আনুমানিক ১০০ বছর ধরে এখানে রয়েছে। একসঙ্গে এত বটগাছ দেখতে নরসিংদীর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন বহু মানুষ ভিড় জমায়।’

তারা আরও জানায়, প্রতি বছর জৈষ্ঠ্য মাসের ২ তারিখ এই বটগাছগুলোকে গিয়ে সনাতন ধর্ম্বাবলীরা উৎসবের আয়োজন করে। অন্যান্য বটবৃক্ষ থেকে এ গাছগুলো ভিন্ন রকম। দিনের বেলা ভালো পরিবেশ ও সুন্দর লাগলেও বিশেষ করে সন্ধ্যার দিকে এখানে ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

সাগর ও লাকী দম্পতি এখানে ঘুরতে এসে বলেন, ‘অনেক শুনেছি ১০০ বটতলার কথা। তাই আজ সময় করে ঘুরতে চলে আসলাম। দেখছি, বেশ ভালোই লাগছে। চারপাশের পরিবেশটা মনোমুগ্ধকর। বটগাছগুলো দেখে মনে হচ্ছে প্রাচীন কালের। বটগাছ থেকে নেমে আসা প্রতিটি ডালা, কালের পরিক্রমায় নতুন বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, শিকড় থেকে সৃষ্ট প্রতিটি বটবৃক্ষ তার মূল গাছের সঙ্গে সন্তানের মতো জড়িয়ে রয়েছে। ঘুরাঘুরি করে আমরা ভালোই আনন্দ করলাম।’  নরসিংদীতে পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন অধ্যাপক রাম গোপাল চন্দ্র বলেন, ‘গাছগুলো আমাদের ইতিহাসের সাক্ষী। এগুলোকে সংরক্ষণ করে রাখা প্রয়োজন। যাতে পরবর্তী প্রজন্ম প্রাচীনতম বটবৃক্ষের সর্ম্পকে জানতে পারে। সময়ের ব্যবধানে প্রায় ১০০ বছর বয়েসী বটগাছগুলো ঘিরে এখানে গড়ে উঠতে শুরু করেছে সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র। এটাকে কাজে লাগানো দরকার।’