সারা বাংলা

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে সফল ব্যবসায়ী জুবায়ের

কাজী জুবায়ের ওরফে রাজার বয়স এখন (৪৮)। শিশু বয়সে হাসি-কান্নায় বাড়ি মাতিয়ে রাখার কথা ছিলো কাজী জুবায়েরের। কিন্তু সেই বয়সে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। চিকিৎসার পর সুস্থ হলেও তার পা দুটি অচল হয়ে যায়। 

এরপর নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে পড়াশোনা শেষ করে বাবার হোমিও ওষুধের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হন। এক পর্যায়ে ডিপ্লোমা শেষ করে টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্র নিরালা মোড়ে নিজেই হোমিও ব্যবসা শুরু করেন। পাশাপাশি ফ্লেক্সিলোডসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর ব্যবসা শুরু করেন। শারীরিক প্রতিবন্ধতাকে জয় করে বর্তমানে তিনি সফল ব্যবসায়ী।

জুবায়ের টাঙ্গাইল পৌরসভার দিঘুলিয়া এলাকার মৃত কাজী আব্দুল মতিনের ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।আর তিনিও তিন মেয়ের বাবা। তারা সকলেই লেখা পড়া করছে। সব মিলিয়ে সুখের সংসার কাজী জুবায়েরের।

কাজী জুবায়ের জানান, চার বছর বয়সে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা করা হলেও তার পা দুটি আর সচল হয়নি। মা বাবা, স্বজন ও সহপাঠীদের সহযোগিতায় ১৯৯২ সালের বাড়ির পার্শ্ববর্তী শহীদ মিজানুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৯৫ সালে এইচএসসি পাশের পর স্নাতক শেষ করেন। পাশাপাশি ১৯৯৮ সালে জামালপুর হোমিও কলেজ থেকে ডিপ্লোমা শেষ করে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে তার বাবার সাথে হোমিও ব্যবসা শুরু করেন। তার বাবা মারা যাওয়ার পর ২০০১ সালে তিনি নিজেই পিওর হোমিও ফার্মেসি নামে ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকেন। ২০১০ সালে পিওর টেলিকম নামে ফ্লেক্সিলোডসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর ব্যবসা শুরু করেন। সেখানেও তার সফলতা আসে। 

কাজী জুবায়ের বলেন, পড়াশোনা ভালো করলেও দুটো পা সচল না থাকায় আমি সরকারি কোন চাকরি করতে পারিনি। ফলে জীবনের প্রতিটি ধাপে খুব কষ্ট করে চলতে হয়েছে। তারপরও আল্লাহ পাকের কাছে শুকরিয়া। ব্যবসা করে যা আয় হয়, তা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে সংসার চালাতে পারছি। 

তিনি বলেন, আমার মতো সমাজে অনেকেই আছেন। আমরা সমাজের বোঝা নই বরং সমাজ তথা দেশের একটি অংশ। আমার মতো অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে বা অন্য কারো উপর নির্ভর করে বেঁচে আছেন। এটা আমার পছন্দ নয়। আমি মনে করি, তাদের ব্যবসা বা অন্য কোনো কর্মের মাধ্যমে জীবন চালানো উচিত। আর এটাই গর্বের।