সারা বাংলা

পঞ্চগড় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

পঞ্চগড় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান আরিফ এবং সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে উপজেলার অধিনস্থ ১০ ইউনিয়নের পদবঞ্চিত নেতারা। একইসঙ্গে তারা সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে অবৈধ কমিটি অনুমোদন দেxয়াসহ বিস্তর অভিযোগ তোলেন।

রোববার (৪ নভেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করাসহ এই অভিযোগ তোলেন পদবঞ্চিত নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তাপস চন্দ্র রায় ও আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন।

বক্তব্যে তারা বলেন, গত ২৫ নভেম্বর রাতে পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিকে বাদ দিয়ে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কমিটি অনুমোদন করে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। যেখানে পদ পেয়েছেন স্কুলের বাচ্চা, বিবাহিত, ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতাকারী, অছাত্র, মাদকাসক্ত এবং জামাত বিএনপি পরিবারের সন্তানেরা। টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে এমন কমিটি অনুমোদন দিয়ে তারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন।

তাপস চন্দ্র রায় বলেন, ‘২৫ নভেম্বর অনুমোদন দেওয়া কমিটিতে আমাকে মাগুড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মনোনীত করা হয়। আমি বিষয়টি অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পদত্যাগ করি। কারণ, আমার সঙ্গে যাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে, তিনি অছাত্র, মাদকাসক্ত এবং ছিনতাইকারী।’

একইভাবে পদত্যাগ করেছেন গরিনাবাড়ী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শেখ মাছুম। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক যেই দুইজনকে করা হয়েছে, তারা ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে ভোট করেছেন।’ 

বক্তারা বলেন, শুধু মাগুড়া এবং গরিনাবাড়ী ইউনিয়নে নয়; বরং উপজেলার ১০টি ইউনিয়নেই অযোগ্যদের পদ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অমরখানা ইউনিয়নের সভাপতি মাদক ব্যবসায়ী। হাফিজাবাদ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অছাত্র। হাড়িভাসা ইউনিয়নের সভাপতি অছাত্র, বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। সাতমেড়া ইউনিয়নের সভাপতি জামায়াত পন্থি। ধাক্কামারা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবে এসএসসি পাস করেছে, ইতোপূর্বে ছাত্রলীগের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক ছিল না।

বক্তারা অবিলম্বে ১০টি ইউনিয়নের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি ঢেলে সাজানোর দাবি জানান।

এ সময় কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আরিফ ফয়সাল, অমরখানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নাহিদ নেওয়াজ কাজল, আনারুল ইসলাম বিপুল, হাফিজাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের মোনায়েম আহসান প্রধান মুনিফসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আরিফ বলেন, কমিটি অনুমোদন দেওয়ায় অনিয়ম করা হয়নি। জেলা আওয়ামী লীগ এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পদবঞ্চিত হয়ে যারা এমন অভিযোগ তুলছেন, তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেন তিনি।