সারা বাংলা

গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষশূন্য বাড়ি, আগুনে পুড়লো ১৪ ঘর

জমিসংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের মামলার শিকার হয়ে গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি যখন পুরুষশূন্য, তখন গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেল ৫ পরিবারের ১৪টি ঘর। এতে সর্বশান্ত হয়েছে পরিবারগুলো। 

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পানিমাছ পুকুরি এলাকার মোজাম্মেল হকের বাড়িতে আগুন লাগে। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মোজাম্মেল হক ও তার ৪ ভাইয়ের মোট ১৪টি ঘর পুড়ে গেছে। এতে মারা গেছে বাড়ির হাঁস-মুরগি, কয়েকটি ছাগল, ধান, চাল, নগদ অর্থ এবং জমাজমি কাগজপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ নথি। আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন  ভুক্তভোগীরা। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ করেছে প্রতিপক্ষরা। তারা জানান, একই এলাকার খাজিম উদ্দীনের ছেলে রশিদুল, জিয়াউর এবং রফিকুলদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছে তাদের। ক্রয়কৃত সম্পত্তি দখলে রেখে তারা শুরু থেকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে। মামলা-হামলাও করেছে বিভিন্ন সময়ে। পূর্ব শত্রুতার জেরে খাজিম উদ্দীনের ছেলেরাই এই অগ্নিসংযোগ করেছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের মনসুরা বেগম বিলাপ করে বলেন, ‘জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে ঘরবাড়ির সঙ্গে পুড়েছে আমাদের স্বপ্নটাও। আগামীকাল আমার অনার্সের ইমপ্রুভ পরীক্ষা। কীভাবে পরীক্ষা দিবো?’ 

ভুক্তভোগী পরিবারের রাকিব বলেন, ‘আমাদের জমি অন্যায়ভাবে ভোগ দখল করছে রশিদুল, জিয়াউর এবং রফিকুলরা। জমি দাবি করলেই হামলা করেন তারা। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশও তাদের পক্ষ নিয়ে কথা বলে।’ 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা জমিতে গেলে স্বয়ং সদর থানার ওসির নেতৃত্বে আমাদের লাঠিপেটা করে এলাকা ছাড়া করা হয়। একইসঙ্গে বেশ কিছু মহিলাকে আটক করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়। সেই মামলার গ্রেফতার আতঙ্কে রাতে আমরা বাড়িতে থাকি না। আর এই সুযোগে প্রতিপক্ষরা ঘরে আগুন দিলো।’ 

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারি চাকরি করি। আমাদের পক্ষে এমন কাজ কী করে সম্ভব? আমাদের বিরুদ্ধে তারা দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করছে।’ 

এ বিষয়ে কথা বলতে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়াকে।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটিতে পরিদর্শনে যান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম এবং ইউএনও মাসুদুল হক। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শুকনো খাবার এবং অর্থসহায়তা দেন।