সারা বাংলা

পুলিশের সহায়তায় নিজের বিয়ে ঠেকালেন ইতু মনি

ঝালকাঠির নলছিটিতে বাড়ি থেকে পালিয়ে এবং পুলিশকে খবর দিয়ে নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকালেন ইতু মনি (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রী। আজ শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।

এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে ওই ছাত্রীকে তার বাবা-মা বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন।

 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতু মনি আজ ভোর ৬টার দিকে কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজের এক বান্ধবীর বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের সহযোগিতায় নলছিটি উপজেলা প্রশাসন ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ইতু মনিকে বিয়ে দেওয়া হবে না মর্মে তার বাবা নুরুল ইসলাম হাওলাদার ও মা দুলু বেগম কাছ থেকে  মুচলেকা নেয় প্রশাসন। পরে মেয়েটিকে বাবা-মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়।

ইতু মনি (১৪) উপজেলা খাগড়াখানা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।  

স্কুলছাত্রী ইতু মনি বলেন, ‘বাড়ির পাশের বেল্লাল ঢালী নামের এক সৌদি প্রবাসীর সঙ্গে আজ আমাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছেলেন মা-বাবা। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আমাকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়। ভোরে কৌশলে পালিয়ে আমি আমার এক বান্ধবীর বাসায় যাই। সেখান থেকে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্যকে বিষয়টি জানাই। পরে পুলিশ ও  প্রশাসন এসে আমাকে উদ্ধার করে।’ 

খাগড়াখানা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মেয়েটির বিয়ের বয়স হয়নি। তাকে তার বাবা-মা জোর করে প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছে। মেয়েটি ভয়ে বাড়ি থেকে পালায়। আমাকে ফোনে সে বিস্তারিত বলে। আমি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘ইতু মনি কেবল ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। ওকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। আমি মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়েছি। তাকে পূর্ণ বয়স না হওয়া পর্যন্ত যেন বিয়ে দেওয়া না হয়, এ ব্যাপারে নজর রাখবো।’

নলছিটি থানার এসআই মফিজুর রহমান বলেন, ‘ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে তার মা ও বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়। আঠারো বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিয়ে দিতে নিষেধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে মেয়েটির বাবা-মার কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।’