সারা বাংলা

একাধিক বিষয়ের বই পাননি শিক্ষার্থীরা, সিলেবাস নিয়ে শঙ্কা

নতুন বই বিতরণের প্রায় আড়াই মাস অতিবাহিত হলেও টাঙ্গাইলে একাধিক বিষয়ের বই এখনো পাননি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কেউ পুরাতন বই, আবার কেউ অন্যের কাছ থেকে বই নিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার এসএসসি পরীক্ষা, রমজান, ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে দফায় দফায় বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। সব মিলিয়ে সিলেবাস শেষ করা নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 

শনিবার (১১ মার্চ) টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোর জন্য বইয়ের চাহিদা দেওয়া হয়েছিলো ৫৮ লাখের বেশি। এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ বই পায়নি শিক্ষা অফিস। এর মধ্যে নবম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ইসলাম/হিন্দু ধর্ম, বাংলাদেশের ইতিহাস সভ্যতা, অর্থনীতি, পৌরনীতি, হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসা উদ্যোগ বই অসেনি। 

জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবি, বছরের শুরুতে এক সঙ্গে সব বই পেলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। কারণ এসএসসি পরীক্ষার জন্য অনেক বিদ্যালয় বন্ধ থাকে। এছাড়াও রমজান, ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে এক থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত বিদ্যালয় বন্ধ থাকে। তাই বছরের শুরুতে একত্রে সব বই দেওয়ার দাবি জানিয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 

স্কুলের নাম প্রকাশ না করার শর্তে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদ রানা বলেন, বছরের শুরুতে কিছু বই পেয়ে পড়াশোনা শুরু করেছি। তবে এখনও ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বই পাইনি। পুরাতন বই দিয়ে পড়ার চেষ্টা করছি। সিলেবাস শেষ নিয়ে শঙ্কায় আছি।’    একই শর্তে ইতি আক্তার নামে নবম শ্রেণির অপর এক ছাত্রী বলেন, ‘আমরা মানবিক শাখার বই এখনো হাতে পাইনি। আমার অনেক বান্ধবী পুরাতন বই আবার কেউ  অন্যের কাছ থেকে বই নিয়ে পড়ার চেষ্টা করছে। বছরের প্রায় সিংহ ভাগ চলে যাচ্ছে। বই না পাওয়ায় আমরা আমাদের সিলেবাস শেষ করা নিয়ে শঙ্কায় আছি। সামনের দিন গুলোতে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তখন আর পড়াশোনা হবে না।’ 

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ধরেরবাড়ী মুসলিম হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নবম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি, গণিতসহ একাধিক বিষয়ে বই এখনও হাতে পাইনি। যে সময় আছে তাতে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হবে না। কারণ ক্লাস নেওয়ার প্রধান সময় চলে যাচ্ছে। সামনে এসএসসি পরীক্ষা, রমজান, ঈদসহ দফায় দফায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।’ 

শহরের পুলিশ লাইনস আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, ‘অনেক দিন হয়ে গেলেও আমরা বই পাচ্ছিলাম না। তবে, গতকাল শনিবার উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বইগুলো পেয়েছি। রোববার থেকে বইগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে। আশা করছি সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হবে। তবে শিক্ষার্থীদের ওপরে কিছুটা চাপ পড়বে।’ 

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি শামীম আল মামুন জুয়েল বলেন, ‘বেশির ভাগ বিদ্যালয় বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও মানবিক বিভাগের বই পায়নি। বছরের শুরুতে একসঙ্গে সব বই দিতে পারলে শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ভালো হতো। শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি কোনো চাপ পড়তো না।’ 

টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম বলেন, ‘এ বছর বইয়ের ঘাটতি ছিলো। নবম শ্রেণির কিছু বই আসেনি। অন্য সব শ্রেণির বই এসেছে। এ পর্যন্ত আমরা ৮৫ শতাংশ বই পেয়েছি। বাকি ১৫ শতাংশ বইয়ের চাহিদা পাঠিয়েছি।’