সারা বাংলা

বর-কনে ঘোড়ায়-পালকিতে, হেলিকপ্টারে এমপি

দাদা বিয়ে করতে গিয়েছিলেন ঘোড়ায় চড়ে। আর কনে এনেছিলেন পালকিতে। ছোটবেলা থেকে সেই গল্প শুনে বড় হওয়া মতিউর রহমান হালিমও বিয়ে করতে গেলেন ঘোড়ায় চড়ে। আর কনে আনলেন পালকিতে। কনে বাড়িতে দাওয়াত খেতে হেলিকপ্টারে চড়ে এলেন এমপি। এক বিয়ে বাড়িতে ঘোড়া, পালকি আর হেলিকপ্টার দেখে অবাক এলাকার লোকজন।

শনিবার (১৮ মার্চ) রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এই বিয়ে হয়। বর মতিউর রহমানের বাড়ি উপজেলার ভরট্ট গ্রামে। তার বাবা আবদুল মান্নান মাদ্রাসাশিক্ষক। মা হালিমা খাতুন স্বাস্থ্যকর্মী। তাদের একমাত্র সন্তান মতিউর। সোনাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজাহারুল হকের একমাত্র মেয়ে ফারহানা আঁখির সঙ্গে মতিউরের বিয়ে হয়েছে।

আঁখির বিয়েতে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। গাড়ি নয়, হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে উড়ে আসেন তিনি। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে তিনি হেলিকপ্টারে ফিরে যান। স্থানীয় ফুটবল মাঠে হেলিকপ্টার নামে এবং উড়ে। গ্রামে প্রথমবার হেলিকপ্টারের এই দৃশ্য দেখতে ফুটবল মাঠে ভিড় করে মানুষ।

পরিবারের সদস্যরা জানান, চীন থেকে পড়াশোনা করে আসা মতিউরের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ের আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী আঁখির। মতিউরের ইচ্ছা অনুযায়ী, একটা ঘোড়া ভাড়া করে আনা হয়। আর গ্রামের প্রবীণ একজন মিস্ত্রিকে দিয়ে তিন দিনে তৈরি করা হয় একটি পালকি। ঘোড়ায় চড়ে বেলা ১১টার দিকে মতিউর বিয়ে করতে যান। তাঁর বাড়ি থেকে কনেবাড়ির দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পালকিতে করে নববধূকে বাড়িতে নিয়ে আসেন মতিউর।

মতিউরের চাচা মামনুর রশিদ বলেন, ছেলের দাদা আহম্মদ হোসেন ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করেছিলেন। তিনিও নববধূকে বাড়ি এনেছিলেন পালকিতে করে। সেই গল্প শুনে বড় হওয়া মতিউরও চেয়েছিলেন একইভাবে বিয়ে করতে। তার ইচ্ছা পূরণ করা হয়েছে। গ্রামবাসীকে চমকে দিতে অনেকটা গোপনে গোপনেই এ আয়োজন করা হয়েছিল। গ্রামের মানুষ চমকে গেছে।

কনের বাবা ইউপি চেয়ারম্যান আজাহারুল হক বলেন, তাঁর মেয়ের বিয়েতে স্থানীয় এমপি এনামুল হকসহ প্রায় তিন হাজার মানুষকে দাওয়াত করা হয়েছিল। তারা সবাই এসেছিলেন। বর ঘোড়ায় এসে পালকিতে করে কনে নিয়ে গেছে। এমপি এসেছিলেন হেলিকপ্টারে। এই বিষয়গুলো গ্রামবাসীর ভালো লেগেছে। সবার কাছে এই বিয়েটা অনেক দিন মনে থাকবে।