সারা বাংলা

দ্রুতগতি ও চালকের অদক্ষতায় এক্সপ্রেসওয়েতে বার বার দুর্ঘটনা

পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। তবে সেতুর দুই পাশের এক্সপ্রেসওয়ে এখন যাত্রীদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ দুই-একদিন পরপরই এখানে ঘটছে মারাত্মক দুর্ঘটনা। আর এ জন্য যানবাহনের দ্রুতগতি ও চালকের অদক্ষতাকে দায়ী করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি, গতি নিয়ন্ত্রণ ও চালকদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা হলেই দুর্ঘটনা কমবে। একইসঙ্গে সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নেরও দাবি জানানো হয়।

জানা গেছে, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত চলে গেছে এক্সপ্রেসওয়ে। আর এই এক্সপ্রেসওয়েতেই প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। রোববার (১৯ মার্চ) সকালে দ্রুতগতির একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৯ জন নিহত হয়।

এর আগে, গত জানুয়ারি মাসে সেতুর টোল প্লাজার কাছে অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। এর পরের মাসে এক দুর্ঘটনায় চীনা নাগরিকসহ ২ জন নিহত হয়। গত এক বছরে এমন ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪০টি।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু সালেহ মুসা বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়ে এখন যেন মৃত্যুফাঁদ। কয়েক দিন পরপরই এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে ঝরছে তাজা প্রাণ। এই মহাসড়কে চালচলকারী অধিকাংশ গাড়িচালক নির্দিষ্ট গতিসীমা মানেন না।’

রফিকুল ইসলাম রাজা নামের অপর একজন বলেন, ‘গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা রাখা উচিত। এছাড়া, চালকরা সড়ক পরিবহন আইন মেনে চলেন না। তাই মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। গাড়ির গতি থাকার কথা ঘণ্টায় ৮০ কি. মি.। অথচ অধিকাংশ সময় গতি থাকে ১০০-১২০ কি. মি.।’

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন মোতাবেক একজন চালকের সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা একাধারে গাড়ি চালানোর বিধান রয়েছে। এরপর ৩০ মিনিট বিরতি নিয়ে আরও তিন ঘণ্টা চালাতে পারেন। একদিনে সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। কিন্তু অধিকাংশ বাসকোম্পানি এই আইন মানে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানোর ফলে চালকদের শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়। ফলে অনেক সময় তারা চলন্ত অবস্থাতেই ঘুমিয়ে পড়েন। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের উচিত সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।’

জেলা পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি খুব দ্রুতগতিতে চলে এটা সত্য। তবে, গতিসীমা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু লোকবল সংকটের কারণে সেটা সব সময় সম্ভব হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়েতে সর্বোচ্চ গতি থাকার কথা ঘণ্টায় ৮০ কি. মি.। শুনেছি, অনেক গাড়ির গতি আরও অনেক বেশি থাকে। সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে।’