সারা বাংলা

দড়িতে বাঁধা অসহায় জীবন

হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা। দড়ির অপর প্রান্ত কখনও গাছের সঙ্গে, কখনও খুঁটিতে কিংবা ঘরে থাকলে খাটের পায়া, জানালার শিকে বেঁধে রাখা। উদ্দেশ্য একটাই আশরাফুল আলম যেন কোনোক্রমেই ছুটে যেতে না পারেন। বন্ধনমুক্ত আশরাফুল অন্যের জন্য যতটা না বিপজ্জনক তার চেয়ে বেশি বিব্রতকর তার পরিবারের জন্য।

আশরাফুল মানসিক ভারসাম্যহীন। যে কারণে ছেলেবেলা থেকেই তাকে চোখে চোখে রাখতে তার পরিবারকে বাধ্য হয়ে দড়ির সাহায্য নিতে হয়েছে। আর এভাবেই গত ২০ বছর দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় অসহায় জীবন যাপন করছেন তিনি।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব সারডুবী এলাকার আজিম উদ্দিনের ছেলে আশরাফুল আলম (৪০)। দিনমজুর আজিম উদ্দিন বৃদ্ধ। ফলে তাকে এখন আর কাজে ডাকেন না কেউ। সংসারের খরচ মেটাতেই তার ত্রাহিদশা! তার ওপর সন্তানের চিকিৎসা-খরচ জোগার করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু বাবার মন মানে না। বিভিন্ন হাট-বাজারে মানুষের দ্বারে ঘুরে ঘুরে সহায়তা কামনা করেন এই বৃদ্ধ বাবা।

আজিম উদ্দিন জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে আশরাফুল মানসিক ভারসাম্যহীন। চিকিৎসা করালে সুস্থ্য হয়ে উঠবে। কিন্তু যেখানে এক বেলা না-খেয়ে কাটাতে হয় সেখানে ছেলের চিকিৎসা তিনি কীভাবে করবেন। কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

বড়খাতা ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমান জানান, আশরাফুলের পরিবারকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি সহযোগিতা করেন তাহলে ভালো হয়। এতে ছেলেটির সঠিক চিকিৎসা হবে। বেঁচে যাবে একটি পরিবার।

সমাজের হৃদয়বানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান আতিয়ার রহমান। কেউ চাইলে আজিম উদ্দিনকে অর্থ সহায়তা করতে পারেন ০১৭৮৮১৩৩৬২৩ নাম্বারে।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পর খোঁজ নিতে লোক পাঠিয়েছি। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে