সারা বাংলা

‘টাকা নেউক, বিকালে ডাক্তার তো পাইছি’ 

‘বিকালে হঠাৎ করি প্যাটোত বিশ (পেট ব্যাথা) উঠে। তাড়াতাড়ি ভ্যানোত (ভ্যান) উঠি হাসপাতাল আসি। ভয়ে ছিনু ডাক্তার আছে না নাই। কিন্তু হাসপাতালে আসি দেখি ডাক্তার আছে। ২০০ টাকা নিয়া ডাক্তার দেখিল। সরকারি হাসপাতালোত তো টাকা লাগে না। তারপরও টাকা নিল। টাকা নেউক, ডাক্তার তো দেখেবার পারছু।’ 

আঞ্চলিক ভাষায় নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে মহসিন আলী (৫৫) নামের এক রোগী রাইজিংবিডিকে এভাবেই নিজের মনের কথাগুলো বলেন।

মহসিন আলী জানান, তাকে ডাক্তার জানিয়েছে এখন থেকে শুক্রবার বাদে সপ্তাহে ছয় দিনই বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভিজিট দিয়ে হাসপাতালে ডাক্তার দেখানো যাবে। ভিজিট দিয়েও তিনি বিকেলে ডাক্তার দেখানোর পক্ষে।  

তিনি জানান, তাঁর বাড়ি হাসপাতাল থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরের উত্তর গোমনাতিতে। সকালে হাসপাতালে বিনামূল্যে ডাক্তার দেখানো যায়। বিকেলে কারো সমস্যা হলে, রাতে ছাড়া ডাক্তার পাওয়া যায় না। ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায়।

চিকনমাটি এলাকার ইয়াছিন আরাফাত নামের অপর এক রোগী বলেন, ‘আমি বাথরুমে পড়ে গিয়ে প্রচন্ড ব্যাথা পাই। হাসপাতালে অর্থপেডিক্স সার্জনকে ৩০০ টাকা ভিজিট দিয়ে দেখিয়েছি। চেম্বারে ডাক্তাররা ৬০০ হতে ৭০০ টাকা ভিজিট নেয়। চিকিৎসক দেখাতে চেম্বারে গিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।’ 

মটুকপুর এলাকার রোগী তাহেরা বেগম বলেন, ‘আমরা চাই হাসপাতালে সবসময় ডাক্তার থাকুক। তবে যেন ভিজিট নেওয়া না হয়।’

বৈকালিক চিকিৎসা সেবার বিষয়টি এখনো অধিকাংশ মানুষ জানে না বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। তারা এ সেবার কার্যক্রমটির প্রচারণা চালানোর দাবি করেন।

ডোমরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রায়হান বারী বলেন, ‘প্রথম দিনেই ১৪ জন রোগী হয়েছে। আর বৈকালিক চিকিৎসা সেবার বিষয়টি বিভিন্নভাবে আমরা প্রচার করতে শুরু করেছি।’

নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসিবুর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা চালু করা হয়েছে।