সারা বাংলা

তালগাছের গ্রামে তালের রস

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কাকিলাদহ গ্রামের মাঠ-ঘাটে যেদিকে চোখ যায়, প্রচুর তালগাছ দেখা মেলে। তাল গাছের কারণে কাকিলাদহ তালগাছের গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

তালগাছ ঘিরে বাড়তি মুনাফা করেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। কাঁচা তাল, তালের রস, পাকা তাল, তালের গাছ ও পাতা বিক্রি করে অর্থ আয় করেন তারা। শুধু তালের রস বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন প্রায় দেড়শত পরিবার। সুস্বাদু তালের রস খেতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এখানে ভিড় জমায়।

এক গ্লাস তালের রস বিক্রি হয় ১০ টাকায়। আর এক লিটার নিলে ৫০ টাকা। তালের রস বিক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৪ মাস তালগাছ কেটে রস সংগ্রহ করেন। প্রতিদিন ২০ লিটার রস পান দুটি গাছ থেকে। ৫০ টাকা লিটার হিসাবে প্রতিদিন ৭০০-৮০০ টাকা আয় হয়। দুটি গাছ থেকে এক মৌসুমে আসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা।

একই এলাকার রস বিক্রেতা সুরুত আলী জানান, গ্রামে ১৫ হাজারের বেশি তালগাছ আছে। ১৫০-২০০ জন গাছি আছে। যারা তালের রস বিক্রি করে সংসার চালান। 

তালের রসের ব্যবসায়ী আক্কাস আলী বলেন, তালগাছ থেকেও যে লাখ লাখ টাকা আয় করা যায়, তার উদাহরণ এই গ্রাম। অনেক পরিবার গরম কালের এ সময় রস, কাঁচা তাল, পাকা তাল, তাল পাতা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। 

আরেকজন গাছি মহসীন আলী জানান, তিনি এই সময়ে বর্গা নিয়ে গাছ কাটেন। এক মৌসুমে গাছের মালিককে গাছপ্রতি ৫০০ টাকা দিতে হয়। সেখান থেকে গাছপ্রতি ১৫ হাজার টাকা আয় হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তালগাছের কারণে স্মরণকালের মধ্যে বজ্রপাতে এ এলাকায় মানুষের মৃত্যু হয়নি। বজ্রপাতে তালগাছের ক্ষতি হলেও মানুষের ক্ষতি হতে দেখিনি। তালগাছ পরিবেশের ভারসম্য রক্ষার পাশাপাশি অর্থ রোজগারের বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে।’ 

সাবেক ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম বলেন, তালগাছ কেন্দ্র করে এই এলাকায় অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে। গাছ থেকে রস কেটে বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে।